সুদীপ্ত শাহীন, লালমনিরহাট:
মাত্র ৫ বিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকা খরচ করে ফুল কপি ও বাঁধা কপি চাষ করে এক লাখ টাকা আয় করেছে কৃষক সামছুদ্দিন। এখন তার জমিতে ৬০/৭০ হাজার টাকার ফসল রয়েছে। সবজি চাষে লাভের মুখ দেখে কৃষক দারুন খুশি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এমনটি ঘটেছে।
বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু ও তিস্তা শেখ হাসিনা সেতু নির্মানের পর জেলার আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়ন সবজি চাষের সুখ্যাতি দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে যায়। এ বছর ইউনিয়নের চাষি গণ শীতের আগাম জাতের ফুল কপি, বাঁধা কপি, বেগুন সহ নানা জাতের সবজি চাষ করেছে। সবজির দামও ভাল পেয়েছে। কমলাবাড়ি গ্রামের কৃষক সামছুদ্দিন (৪০) ৫ বিঘা জমিতে বাঁধা কপি ও ফুল কপি চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে মাত্র ২০ হাজার টাকা। তিনি ইতোমধ্যে জমি হতে ফুল কপি ও বাঁধা কপি তুলে দুই হাজার টাকা প্রতিমন বিক্রি করেছেন। পাইকার গণ জমি হতে ভোর বেলা তুলে নিয়ে যায়। এ বছর ৫ বিঘা জমির ফুল কপির অর্ধেক এক লাখ টাকা বিক্রি করেছে। জমিতে আর অর্ধেক ফুল কপি ও বাঁধা কপি রয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় বিক্রি শুরু হবে। বর্তমান বাজারে চেয়ে একটু কম দামে বিক্রি করতে হবে। না হলেও ১৪/১৫ শত টাকা মন দাম পাওয়া যাবে।
কৃষক সামছুদ্দিন জানান, তার পারিবারিক পেশা সবজি চাষ। পৈত্তিসূত্রে পাওয়া জমি গুলো ছিল উচু ও দোয়াশ বেলে মাটির। তাই ধান, পাট, গম, ভুট্টা, কাউন, সরিষা জাতীয় ফসল চাষ করে লাভ হয় না। সেচ ও সারে খরচ বেশী পরে যায়। ফসল ফলিয়ে উৎপাদন খরচ তুলতে পারতাম না। সবজি চাষের পর হতে আর্থিক স¦চ্ছলাতা এসেছে। ভাগ্য বদলে গেছে। এখন তিনি অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল। এই আর্থিক স্বচ্ছলাতা আসার প্রধান কারণ হিসেবে সে যমুনা ও তিস্তা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সুফল। সেতু নির্মানের ফলে ঢাকা সহ সারা দেশে সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। ৬/৭ ঘন্টায় সড়ক পথে ঢাকা পৌচ্ছানো যায়। এই সুবিধা পেয়ে এ অঞ্চলের মানুষ সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ে। তারা সবজি চাষ করে পাইকারের মাধ্যমে ঢাকায় বিক্রি করে। এভাবে কমলা বাড়ি, ভেলাবাড়ি, কুমড়িরহাট সহ এই অঞ্চলের মানুষ সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ে। এখানে ব্যাপক হারে প্রায় সকল সবজি চাষ হচ্ছে। এই অঞ্চলের কৃষক পরিবার গুলো সারা বছর সবজি, ফলমূল চাষ করে আসছে। এখানকার কৃষকের প্রধান অর্থকারি ফসল সবজি চাষ। এই সবজি জাতীয় ফসল বিক্রি করতে সরকার এখানে বিশেষায়িত সবজি বাজার ব্যবস্থা চালু করেছে। সবজি পঁচনশীল পণ্য। আগে ঢাকা যেতে দুই দিন সময় লাগত। তাই সবজি সারা দেশে নিয়ে যেতে পারতনা। সবজি চাষে সারা বছর কৃষিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে নারী কৃষি শ্রমিকদের বাড়ি পাশে সবজি ক্ষেতে কাজের ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল হামিদ জানান, এই অঞ্চলের কৃষক কে সবজি চাষে সরকার মাঠ পর্যায়ে নানা পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গণ মাঠে সার্বক্ষণিক তদারকি করে থাকে। কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, সরকার যদি এখানে সবজি সংরক্ষণের জন্য বিশেষায়িত হিমাগার নির্মাণ করত তাহলে কৃষক আরো উপকৃত হত।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post