এই প্রশ্ন ভার্চুয়াল জগতের সকলের। যখনই ঘোষণা এসেছে তখনই বেড়েছে চিন্তার পরিধি।
দৈনিক দেশতথ্য পত্রিকার পাঠকদের জন্য চিন্তা করে যা জেনেছি তা দিয়েই সাজিয়েছি এই প্রতিবেদন।
জগৎ তিনটা। যেমন বাস্তব জগৎ মনোজগৎ অতিইন্দ্রিয় জগৎ। বিজ্ঞানের প্রসার এর সাথে যোগ করিয়েছে ভার্চুয়াল জগৎ। এই মিলে চার জগৎ। এই চারটির একটিতে আমরা বাস করি। মনোজগতে চিন্তার মাধ্যমে বিচরণ করি। অত্যিন্দ্রিয় জগত সম্পর্কে কেবলমাত্র ভাবতে পারি। ডিভাইস দিয়ে ভার্চুয়াল জগৎকে দেখতে পারি। দেখা ও শুনা ব্যাতিত এই জগতের কোন কিছু স্পর্শ করতে পারিনা।
মার্ক জাকারবার্গ ২৮ অক্টোবর (২০২১) জানান, মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড এর অধীনে চলবে ফেসবুক এর সকল প্রোডাক্ট।
মেটা (Meta) শব্দটা এসেছে ১৯৯২ সালে। নিল স্টিফেনসনের “Snow Crash” উপন্যাসে প্রথম “মেটাভার্স” শব্দটি ব্যবহার করেন।
মেটা দিয়ে মার্কজাকার বার্গ ভার্চুয়াল জগৎকে স্পর্শ ও অনুভূতির মধ্যে আনতে চাচ্ছেন। এর জন্য দুনিয়ার সব প্রযুক্তিবিদদের কাজে লাগাতে যাচ্ছেন। তার প্রচেষ্টা সফল হলে মানুষের অনুভূতি ও স্পর্শে আসবে ভার্চুয়াল জগৎ। এর জন্য সময় লাগতে পারে ১০ বছর।
কিভাবে আসবে তা পরিষ্কার ভাবে জানিনা। তবে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে যা পেয়েছি তাই দৈনিক দেশতথ্য পত্রিকার এই প্রতিবেদনের তুলে ধরেছি।
মার্ক জাকারবার্গ মেটাভার্স (Metaverse) নামে এক নতুন ভার্চুয়াল দুনিয়া তৈরি করতে যাচ্ছেন। যেটা হবে আমাদের ইউনিভার্স এর প্যারালাল অজৈবিক একটা জগৎ।
সেই জগতটা কেমন হতে পারে তা নিয়ে একটা ধারণা দেই। থ্রি-ডি ও ফোর-ডি ছবি নিশ্চয়ই দেখেছেন। এই ছবিতে একটি বাঘকে বাস্তব আকারেই দেখতে পায়। কিন্ত ওই বাঘকে স্পর্শ করতে পারিনা। এই জগতে স্পর্শ করার অনুভূতি পাওয়া যাবে। এর সাথে যোগ হতে পারে থ্রি-ডি ছবি দেখার আরেকটা AR Glass। যা দিয়ে পাওয়া যাবে স্পর্শ করার অনুভূতি।

যেসকল এপ্লিকেশন ফেসবুকে আছে তার সবই পরিবর্তিত আকারে মেটাভার্সে থাকবে। চাইলে সেখানে আপনি নিজেই নিজের একটা 3D দুনিয়া তৈরি করতে পারবেন। সেই দুনিয়ায় বন্ধু বা আত্মীয়দের আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন।
প্রোফাইল পিকচারের মতোই আপনার ‘3D Avatar সেখানে আপনার প্রতিনিধিত্ব করবে। গেইম খেলার জন্য একটা, ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ভ্রমণের জন্য একটা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার জন্য প্লাটফর্ম ক্রিয়েট করতে পারবেন।
ফেসবুকে যেমন ভিডিও বা অডিও চ্যাট করা যায় সেখানে সেটা থাকবে। তবে এর যোগ হবে স্পর্শ অনুভূতি। যেমন আপনি কোন বান্ধবীর সাথে চ্যাট করছেন চাইলে তার হাতে একটা ফুল ধরিয়ে দিতে পারবেন। সে একটা মিষ্টি কিল দিলে সে অনুভূতিও পাবেন।
মেটাভার্সে আপনার আই কন্টাক্ট, ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন, বডি মুভমেন্ট সব হবে বাস্তব জগতের মতো হবে। বাস্তব জগতে ভালো না লাগলে যেমন ভার্চুয়াল জগতে গিয়ে স্বস্তি নেওয়া যায় ঠিক সেভাবেই ঘরে বসেই চলে যেতে পারবেন মেটাভার্সে।

ঘরে বসেই ঘুরে আসতে পারবেন ইউরোপ আমেরিকা। চাইলে হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘাও দেখে আসতে পারবেন। মন চাইলে মহাকাশও ভ্রমণ করে আসতে পারবেন। চাইলেই নিজের কল্পনার তুলি দিয়ে একটা বাংলাদেশ তৈরি করতে পারবেন।
মেটাভার্সের ভার্চুয়াল ঘরে বসে ভার্চুয়াল বোর্ডে খেলতে পারবেন দাবা বা টেবিল টেনিস সহ নানা ধরনের খেলা। দেখতে পারবেন ভার্চুয়াল টিভি শুনতে পারবেন গান। করতে পারবেন মিটিং, আড্ডা, ক্লাস, খাওয়াদাওয়া সহ অনেক কিছু। সেখানে নিষিদ্ধ বিনোদন জগত থাকবে।
মোট কথা জাগতিক জগতের জৈবিকতা বাদে মেটাভার্সে সবই থাকবে। এরজন্য লেগে যেতে পারে হয়তো ৫/১০ বছর।
যাই করেন এসব দেখতে হলে বাঁচতে হবে। বাঁচতে হলে বাঁচার জন্য সৃষ্টির সব বিধিনিষেধ মানতে হবে। বিশ্বাস রাখবেন স্রষ্টার জীব জগতের বাইরে কোথাও কোন কিছু ফ্রি পাওয়া যাবেনা। পৃথিবীতে অক্সিজেন ফ্রি পাওয়া যায় ভার্চুয়াল জগতের সব কিছুতেই দিতে হবে পয়সা। তাহলেই যেতে পারবেন মার্ক জাকারবার্গের মেটাভার্স দুনিয়ায়।
সাংবাদিক।

Discussion about this post