নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি এলাকায় খবির হোসেন (৪০) নামে এক যুবক স্ত্রী, শাশুড়ী ও শ্বশুরবাড়ির মানসিক নির্যাতনের কথা সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে উল্লেখ করে আত্মহত্যার করার খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় মৃত খবির হোসেনের স্ত্রী অভিযুক্ত মুক্তি (৩২) এবং তার শ্বাশুড়ি লতিফা (৫৫) কে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে তাদের আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইয়াউর রহমান।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে জালকুড়ি এলাকায় ইসমাঈল মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত খবির হোসেন (৪০) চাঁদপুরের উত্তর মতলবের ওটারচর এলাকার মো. আমিনুল হকের ছেলে। বর্তমানে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি শিকদার বাড়ি পুল এলাকায় ইসমাঈল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সে সিদ্ধিরগঞ্জে সিএনজির ব্যবসা করতেন বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আমিনুল হক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে চারজনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন লতিকা (৫৫), মুক্তি (৩২), রমজান (৪০) ও লুৎফর রহমান (৪০)।
অভিযোগপত্রে তার বাবা উল্লেখ করেন, ২ নং বিবাদীর সঙ্গে তার ছেলে খবির হোসেনের ১৭ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে খাদিজাতুল আক্তার মারিয়া (১৫) এবং মোস্তাহিদ (১০) নামে দুই সন্তান রয়েছে।
২নং বিবাদীসহ অন্যান্য বিবাদীরা তার ছেলে খবির হোসেনকে তার সম্পত্তি বিক্রি করে ২নং বিবাদীর ঠিকানায় বাড়ীঘর নির্মাণ করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। তার ছেলে এই বিষয়ে কর্ণপাত না করায় বিবাদীরা বিভিন্ন সময় নানাভাবে তার ছেলেকে অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতন করেছে।
তার ছেলে দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে বিবাদীদের এই অত্যাচার নীরবে সহ্য করে আসছিল। কিন্তু দিন দিন তার ছেলের উপর বিবাদীদের অত্যাচার ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে তার ছেলে বিষয়টি তাদেরকে জানালে তারা বিবাদীদের সঙ্গে উক্ত বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করে। কিন্তু উল্লেখিত বিবাদীরা তাদের কথার কোনো কর্ণপাত করে নি। অতঃপর গতকাল রাতে তারা সংবাদ পান, তার ছেলে সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহতের বাবা আমিনুল হক সময়ের আলোকে জানান, আত্মহত্যা করার আগের দিন আমার ছেলে ফেসবুকে তিনটি পােস্ট দেন। ওই পোস্টগুলো দেখলেই বুঝা যায় আমার ছেলে কতটা মানসিক চাপে ছিলো। তাদের (শ্বশুরবাড়ি) নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা সময়ের আলোকে জানান, খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আমিনুল হক থানায় একটি মামলা দায়ের করলে নিহতের স্ত্রী মুক্তি ও তার শাশুড়ী লতিফাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//ফেব্রুয়ারী ১০,২০২৩//