টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের মুল ইস্যু হয়ে দাড়িয়েছে নরবরে বাঁশের সাঁকো।
চার যুগ পরও দেওহাটা-গেড়ামারা-ধানতারা রাস্তার গেড়ামারা গ্রামের খালের উপর পাকা ব্রিজ নির্মান হয়নি। সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ থাকায় এলাকাবাসির দুর্ভোগের শেষ নেই। আগামী ১৫ জুন বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এই নির্বাচনের ভোটারদের মুল ইস্যু হয়ে দাড়িয়েছে নরবরে এই বাঁশের সাঁকো।
এই বাঁশের সাঁকো একণ চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার মুল ফ্যাক্টর। যে চেয়ারম্যান প্রার্থী নরবরে ঝুঁকিপুর্ন বাঁশের সাঁকোকে পাকা ব্রিজে রুপান্তর করে দিবে তাকেই ইউনিয়নবাসি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে জানিয়েছেন। বহুরিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের কেন্দ্র বিন্দু এখন গেড়ামারা গ্রামের খালের উপর বাঁশের সাঁকো। ইউপি নির্বাচন এবং রাজনীতির কেন্দ্র বিন্দু একন বাঁশের সাঁকো। আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) বহুরিয়া ইউনিয়নের নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
এলাকার ভোটারদের মধ্যে মামুন মিয়া (৬৭), কোদরত আলী (৫৬), স্কুল শিক্ষক আলী হোসেন হোসেন (৫০) ও ওমর ফারুক (৪৩) অভিযোগ করেন, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে নয় নং বহুরিয়া ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশী অবহেলিত। এলজিইডির অধিনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আঞ্চলিক রোড দেওহাটা-গেড়ামারা-ধানতারা রাস্তাটি অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ন। এই রাস্তা দিয়ে কালিয়াকৈর, সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ এবং মির্জাপুর উপজেলার দক্ষিানাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার লোকজন প্রতিদিন যাতায়াত করে আসছে। দীর্ঘ চার যুগের বেশী সময় ধরে গেড়ামারা গ্রামের খালের উপর পাকা ব্রিজ নির্মান না হওয়ায় কৃষি নির্ভর এলাকার লোকজনের যাতায়াতের দুর্ভোগের শেষ নেই। ৩০-৪০ মাইল ঘুরে এলাকার লোকজনকে জেলা ও উপজেলা সদরের সঙ্গে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন এলই চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থীগন এই খালের উপর পাকা ব্রিজ নির্মানের প্রতিশ্রæত দিয়ে ভোট নিয়ে থাকেন। নির্বাচন গেলে তারপর আর তাদের কোন খবর থাকে না। কেউ তাদরে কথা রাখেন না। এ বছল ভোটারগন জোঁট বেঁধেছেন। এ বছর যে চেয়ারম্যান প্রার্থী পাকা ব্রিজ নির্মান করে দিবেন তাকেই তারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসছে ১৫ জুন নির্বাচনে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এরা হলেন সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিয়া ছাদু (নৌকা), স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শিল্পপতি ও সমাজ সেবক মো. রেজাউল করিম বাবুল (আনারস) এবং সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম (ঘোড়া)। তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীই বাঁশের সাঁকোকে পাকা ব্রিজ নির্মানের প্রতিশ্রæতি দিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শিল্পপতি ও সমাজ সেবক মো. রেজাউল করিম বাবুল (আনারস) বলেন, আমি বিগত দিনেও এলাকার জনগনকে সার্বিক সহযোগিতা উন্নয়ন মুলক কাজ করে যাচ্ছি। আমি ব্যক্তি উদ্যোগেও গেড়ামারা গ্রামের খালের উপর একটি বাঁশের সাঁকো নির্মান করে দিয়েছে। আমি নির্বাচিত হলে অবম্যআি ব্রিজটি পাকাসহ প্রতিটি গ্রামের সুষম উন্নয়ন করা হবে।
এ ব্যাপারে আবু সাইদ মিয়া ছাদু (নৌকা) বলেন, আমি নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গেড়ামারা গ্রামের খালের উপর পাকা ব্রিজ নির্মানসহ এলাকার সুষম উন্নয়ন করে যাবো। ইতিমধ্যে জনগনের চলাচলেল জন্য তিনি বাঁশের সাঁকো নির্মান করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। একই কথা জানিয়েছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশরী মো. আরিফুর রহমান বলেন, দেওহাটা-গেড়ামারা-ধানতারা রাস্তাটির গেড়ামারা গ্রামের খালেল উপর ৫০ মিটার পাকা ব্রিজ নির্মানের জন্য প্রকল্প তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে অল্প দিনের মধ্যে প্রকল্প অনুমোদন এবং ব্রিজ নির্মানের কাজ শুরু হবে।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৬ জুন-২০২২//