নিজস্ব প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় বৃটিশ আমেরিকান টোবাকো বিএটি’র শ্রমিক অসন্তোষ দুরীকরণে
শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ার নির্ধারিত সময় পার হলেও সরকারী নির্দেশনা না মানায় মৌসুমি শ্রমিকরা কর্মবিরতীসহ কারখানার প্রধান ফটকের সামনে মানব বন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
বুধবার সকাল ৮টায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহ মহাসড়কের চৌড়হাস এলাকায় বৈষ্যম্যবিরোধী শ্রমিক আন্দোলনের ব্যানারে ব্যাটের কারখানা ঘেরাও করে শ্রমিকদের এই কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ অনুযায়ী ২০১২ থেকে কোম্পানীর পাওনা মুনাফা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচ্যুইটি, এক ও অভিন্ন নিয়োগ পত্র, আইন বহির্ভুত ভাবে বাইরে রাখা শ্রমিকদের চাকুরীতে পূর্নবহালসহ ২২দফা
দাবির বাস্তবায়ন দাবি করেন।
এসময় মৌসুমী শ্রমিক সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ইতোপূর্বে এই
প্রতিষ্ঠানে যে সকল শ্রমিক কাজ করেছে তাদের জন্য শ্রম আইন ও বিধিমতে প্রদেয় সকল সুবিধা কোম্পানী নিশ্চিত করলেও এখন আর সেটা মানছে কর্তৃপক্ষ। একটা স্বাধীন দেশের ভু-খন্ডে কারখানা পরিচালনা করবেন আর দেশের
আইন-কানুন ও সরকারী নিয়মনীতি মানবেন না সেটা কি করে হয়’ ?
অপর শ্রমিক রাজু আহমেদের অভিযোগ, ‘শ্রমিকদের ভালো মন্দ ন্যায্য অধিকার দেখার জন্য এখানে যে সিবিএ সংগঠন রয়েছে তার নেতারা একন মালিকপক্ষের পাচাটা দালাল হয়ে গেছে। আমরা বাঁচলাম না মরলাম তাতে ওই সব দালাল সিবিএ
নেতাদের কোন যায় আসে না। আমরা দেখবো, কি করে সাধারণ শ্রমিকের স্বার্থ না দেখে মালিকের দালালি করে কয়দিন নেতাগীরি করতে পারে’।
তবে এবিষয়ে ব্যাট শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও হিস্যা আদায়ের সংগঠনসিবিএ সভাপতি মোমিনুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে প্রতিবেদকেরআলাপকালে তিনি জানান, ‘শ্রমিকরা কর্ম বিরতী করে মানব বন্ধন কেনো করছে সে বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই, আমি এখন একটা মিটিংএ আছি, পরে কথা
বলবো’ বলেই তিনি কল কেটে দেন।
তবে অভিযোগ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ব্যাট কুষ্টিয়াস্থ কারখানার মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ক্যামেরার সামনে আসতে রাজি হননি। কারখানার প্রধান ফটকে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেননি। ফটকের ভিতর থেকে একজনকে
বলতে শোনা যায়, কর্তৃপক্ষের বক্তব্য কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। যা জানার ওখান থেকে জেনে নিন’।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার
শ্রম পরিদর্শক মুনছুর বিল্লাল জানান, ‘গত বছর অক্টোবরে মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমন্বিত সভা থেকে গৃহীত সিদ্ধান্ত মেনে শ্রমিক অসন্তোষ দুরীকরণে ব্যাটকে যে সময় বেধে দেয়া হয়েছিলো, কর্তৃপক্ষ সেটা না মানার কারণেই এমন
পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নিয়োগপত্র না দেয়া, বিনা কারনে শ্রমিক ছাটায়,
বকেয়া পাওনাদি পরিশোধ, ঝুঁকি ভাতাসহ প্রায় ২২টি ধাপে উল্লেখিত সুপারিশ মেনে শ্রমিক বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে যে সময় দেয়া হয়। এসব মীমাংসিত বিষয় বাস্তবায়ন করে শ্রম মন্ত্রনালয়ের তার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের অনুরোধ করে পত্র প্রেরণ করা হয়েছিলো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ
আদৌ কোন উদ্যোগ নিয়েছেন কি না তা আমাদের জানান নি। এভাবে চলতে থাকলে তো শেষাবধি হয় শ্রমিকদের আইনগ পথেই এগুতে হতে পারে’।