
দৈনিক দেশতথ্য ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের ডক্টর জুবায়ের হোসেন পান্থ এখন আমেরিকার বিশ্বখ্যাত আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস ই কমার্স প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটনে বসবাস করছেন। জানুয়ারিতে আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার পূর্বে তিনি আরেক বিখ্যাত ইনটেল এ ইন্টারনি করেন। বর্তমানে তাঁর বাৎসরিক বেতন বাংলাদেশি টাকায় কোটি টাকার বেশি।
তাঁর বাবা মোফাজ্জল হোসেন ঢাকার নীলক্ষেতের দি ইন্সটিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এ দীর্ঘ দিন চাকরি করেছেন। সেখান থেকে অবসরের পর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির কন্ট্রোলার হিসেবেও এক যুগ দায়িত্ব পালন করেন।
ডক্টর জুবায়ের হোসেন পান্থ’র বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের কোর্টগাওয়ে। তিনি ঢাকার উদয়ন স্কুলের ছাত্র ছিলেন। বোন অর্থি ও বাবা মায়ের সাথে থাকতেন পুরানা পল্টনে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব আরকানাসাস এ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাস্টার্স করেন। আমেরিকার ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।এই ডিগ্রি পাওয়ার পরই ওয়াশিংটনের আমাজনে চাকরির ডাক পান।
জুবায়ের হোসেন গত বছর ডিসেম্বর ১৮ তারিখে ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদানের এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে তার বাবা মা উপস্থিত ছিলেন। ড. যুবায়ের হোসেন ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। বিশ্বের সবচেয়ে নামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তি।’ চাকরি পাওয়ার পর অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন,‘আমার ইচ্ছা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোতে চাকরি করার। আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। আমাজন বিশ্বের চারটি বড় কোম্পানির একটি। সেখানে চাকরি পাওয়া সত্যিই আনন্দের।’

মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি প্রায় ৩৭ বছর আইসিএমএবিতে চাকরি করেছি। এখানকার প্রায় দুই হাজার সদস্য, শিক্ষক ও ছাত্রের সাথে আমার গভীর সখ্যতা ছিল। আমি আশা করে ছিলাম আমার ছেলে তাদের মতোই একজন প্রফেশনাল কিছু হবে। আমার চাওয়ার চেয়ে আল্লাহ অনেক বেশি আমাকে দিয়েছে।
’
তিনি আরো বলেন, ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ডক্টরেট ডিগ্রির প্রদানের সময় সমাবর্তন মঞ্চ থেকে ছেলের নাম ঘোষনার সাথে সাথে পর্দায় ছেলের নাম ও লাইভ ছবি ভেসে উঠে। হল ভর্তি বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পিতা-মাতা, ছাত্র-শিক্ষক ও দর্শকদের মুহু মুহু করতালির শব্দে আমরা বাবা-মা দুজনই আনন্দ অশ্রু সংবরণ করতে পারিনি। এ যে কি অনভূতি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ছেলের সাথে তিন মাস থেকে আমেরিকার বড় বড় শহরে ঘুরে বেড়িয়েছি। ছেলে বিশ্বখ্যাত কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছে। ছেলের এ সাফল্যে আমরা নিজেদের গর্বিত মনে করি। আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া আমরা এখন বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট পাশ ছেলের বাবা মা।’
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুলাই ১৩,২-০২২//