Print Date & Time : 22 April 2025 Tuesday 11:35 pm

বিক্রেতাদের হাঁকডাকে বিভ্রান্ত ক্রেতা, চলছে পকেট কাটা

জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ঈদ মানেই ধনী-গরিব সবাই চায়, সাধ ও সাধ্যের মধ্যে নতুন পোশাক কিনে ঈদের আনন্দে মেতে থাকতে। ঈদে সবার একটা কিছু চাই-ই। মধ্যবিত্ত পরিবারে এই একটি উৎসবকে কেন্দ্র করে জামা-কাপড়ের আনন্দে মাতে শিশু-কিশোররা। যদিও চট্টগ্রাম তথা সারাদেশের অধিকাংশ ব্যবসায়িরা তিন বছর ধরে লোকসানে। এবার শুরুতেই জমে উঠেছে মার্কেটগুলো।

ক্রেতাদের অভিযোগ, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারের আঁচ লেগেছে পাইকারি মার্কেট ও শপিংমলগুলোতেও। ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতাদের পকেট কাটছেন তাঁরাও। মূলত করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অজুহাত তুলে রমজানের শুরু থেকে পোশাকের বাড়তি দাম হাঁকাচ্ছেন তারা। বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করছেন ব্যবসায়ীরা।

তাঁরা বলেছেন, বিগত তিন বছরে লোকসানে পড়ে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। যারা টিকে আছেন, তাদের অধিকাংশই লোকসানে আছেন। এ ক্ষতি পুষিয়ে এ বছর ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরাও। ঈদের এখনো বেশ কিছু দিন বাকি।

সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নগরীর নিউ মার্কেট (বিপনী বিতান) , বালি অর্কিড, সানমার ওশান সিটি, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, আমিন সেন্টার, এ্যাপোলো শপিং কমপ্লেক্স, আক্তারুজ্জামান সেন্টার, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, কেয়ারী, লাকি প্লাজা, খুলশি টাউন সেন্টার, ফিনলে স্কয়ার, ইউনেস্কো সেন্টার, সিংগাপুর ব্যাংকক মার্কেট, ভিআইপি মার্কেট, গুলজার টাওয়ার, আগ্রাবাদ সাউথল্যান্ড সেন্টার, বিনিময় টাওয়ার, বে-শপিং সেন্টার, টেরীবাজার ও আড়ংসহ সব মার্কেটগুলোতে ঈদবাজারের কেনাকাটা জমে উঠেছে। জারা, কে ক্রাফট, অঞ্জন’স, টুয়েলভসহ বিভিন্ন হাউসেও এনেছে ম্যাচিং রঙের পোশাক। রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট। ভারতের মেঘালয়ের ডিজাইনার ইবা মাল্লাইয়ের সংগ্রহের নাম ছিল ‘কিনিহো। রয়েছে নতুন পোশাকে অরেঞ্জ ব্লুম, স্টাইলিশ গাউন।

মার্কেটগুলোয় পাঞ্জাবি, থ্রিপিস ও গজকাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও শার্ট, টি-শার্টও ভালো বিক্রি হচ্ছে। লুঙ্গি ও প্যান্টের বাজারে ক্রেতা কম ছিল। মহিলাদের শাড়ি, লেহেঙ্গা ও গহনার বাজারে লক্ষ্যণীয় মাত্রায় উপস্থিতি ছিল। বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য পোশাকও। চিরায়ত নিয়মে ক্রেতাদের ডাকছেন ব্যবসায়ীরা। বিক্রেতাদের হাঁকডাকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন ক্রেতারা। দামের ক্ষেত্রে অনড় ব্যবসায়ীরা। গতবারের চেয়ে প্রতি পিস পাঞ্জাবির সর্বনিম্ন দাম ৩০০ টাকা বেড়েছে। এক হাজার টাকার পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকায়। গজকাপড়ের দামও এ বছর বেড়েছে। ৭০ টাকার কাপড় বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। ক্রেতাদের এমনই অভিযোগ।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন কারণে এখন ডলারের বাড়তি দাম। কাপড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত সবকিছুর দাম বেড়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ উৎপাদন খরচ তো রয়েছেই। সে কারণে পাইকারদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া যাতায়াত খরচ, দোকান ভাড়া ও কর্মচারীর বেতনও বেড়েছে। এসব হিসাবের পর আমাদের আয় করতে হয়। বেশি দামে বিক্রি না করলে আমরা পোষাব কীভাবে।

চট্টগ্রাম ব্যবসায়ি সংগঠনের নেতা আলহাজ ছালামত আলী বলেন, ‘দেশে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। কী কারণে বেড়েছে, তা আপনারা জানেন। গত তিন বছর কাপড় ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই লোকসানে ছিলেন। অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। আশা করছি ব্যবসায়ীরা বিগত সময়ের ঘাটতি এবার পোষাতে পারবেন। পাশাপাশি মানুষের কষ্টর কথাও ব্যবসায়িদের চিন্তা করতে হবে।’

দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//