এনামুল হক কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনসেড আধাপাকা ঘর এবং ১১টি মেহগুনি গাছ নিলামে অনিয়ম, দুর্নীতির ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও নিলামের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে না জানানোরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি কামরুল হোসেন এবং প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামের যোগসাজশে এমন অনিয়মের বিষয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ৯ ব্যবসায়ী। তারা নিয়ম বহির্ভূত নিলাম বাতিল করে পুনরায় নিলাম আহবানের দাবি জানান।
লিখিত অভিযোগ, বিদ্যালয় ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত অনুযায়ী ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সোন্দহ নন্দলালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন টিন সেড বিল্ডিং ও গাছের নিলাম হওয়ার কথা ছিল। সেদিন অন্তত ৩০ জন ব্যবসায়ী নিলামের জন্য বিদ্যালয়ে ছুটে যান। কিন্তু কোন পূর্ব ঘোষিত নোটিশ ছাড়া হঠাৎ সেদিন প্রধান শিক্ষক নিলাম স্থগিত করেন। উপস্থিত ব্যবসায়ীরা সেদিন প্রধান শিক্ষকের কাছে তাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে আসেন এবং তাদের কে জানানোর জন্য পেপার বিজ্ঞপ্তী এবং মাইকিং করার জন্য অনুরোধ করেন। তবে প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতি যোগসাজশ করে ১৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং কাউকে না জানিয়ে পছন্দের ব্যবসায়ীর কাছে গোপনে নিলাম করেছেন। যা নিয়ম বহির্ভূত এবং অনিয়ম দুর্নীতির সামিল।
অভিযোগকারী ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান, রসুল সেখসহ অন্যরা বলেন, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত সুবিধার্থে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে নিলাম করতে ১১ সেপ্টেম্বর পূর্বঘোষণা ছাড়াই নিলাম স্থগিত করে। আবার কাউকে না জানিয়ে অবৈধভাবে গোপনে নিলাম করেছে। তারা এই নিলাম মানেন না। দ্রুত পুনরায় নিলামের দাবি জানায় তারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, নিলামের কার্যক্রম সভাপতি স্থানীয়দের সঙ্গে করেছেন। তিনি কিছই জানেন না। তাঁর ভাষ্য, প্রায় ১২ বছর বয়সি ১১টি মেহগুনি গাছ ৫৫ হাজার টাকা এবং পুরাতন আধাপাকা ঘরটি ৪৫ হাজার টাকায় নিলাম হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের সভাপতি কামরুল হোসেন বলেন, পত্রিকা ভুল করে একদিন পরে বিজ্ঞপ্তি ছেপেছে। সেজন্য এমন ঝামেলা হচ্ছে। তবে কোনো অনিয়ম বা স্বজনপ্রীতি হয়নি।
নিলামের বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক। তিনি বলেন, সেদিন (১১ সেপ্টেম্বর) নিলামের জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ প্রধান শিক্ষক বললেন নিলাম স্থগিত। এরপরের ঘটনা আর জানা নেই।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও নিলামের কার্যক্রম একই সময়ে হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Discussion about this post