Print Date & Time : 24 August 2025 Sunday 12:17 am

বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে জনজীবন অতিষ্ট

জে,জাহেদ, চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি অতীতের যেকোন সময়ের সহ্যসীমা অতিক্রম করেছে। বিদ্যুতের এই অসহ্য ভোগান্তিতে শিশু থেকে বৃদ্ধরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। যদিও বিদ্যুতের অব্যাহত এই বিপর্যয়ের মধ্যেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার আছেন বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। 

প্রতি ঘণ্টা বা আধঘণ্টায় নয়; সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিনিটে মিনিটে চলে আসা-যাওয়ার খেলা। আর রাত নামলে সেটুকুও উধাও হয়ে যায়। গত কয়েক সপ্তাহ বিদ্যুতের এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে সময় কেটেছে কর্ণফুলীবাসীর। এই উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবির) দুটি লাইনেই ৫ ইউনিয়নে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিদ্যমান। 

দিনে বিদ্যুতের এ ভেলকিবাজিতে ও বিদ্যুৎবিহীন রাত কাটিয়ে কর্ণফুলীবাসী অতিষ্ঠ হলেও পিডিবির মইজ্জারটেক উপকেন্দ্র ও পটিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ বিভাগ) ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রকৃতপক্ষে গ্যাস সঙ্কটের কারণে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুতের ঘাটতি। আমাদের উপকেন্দ্রের সমস্যা না। চাহিদা অনুযায়ি সরবারহ কম তাই লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে বলে মনে হচ্ছে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনেরাতে উপজেলার সিংহভাগ অংশে কেন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে, ১ ঘন্টার কথা বলে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকা প্রশ্নের কোন জবাব নেই পিডিবি প্রকৌশলীর।

পিডিবি সুত্র বলছে, কর্ণফুলীর শিকলবাহা, চরলক্ষ্যা ও চরপাথরঘাটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের আওতায় প্রায় ২৫ হাজার আবাসিক গ্রাহক ছাড়াও রয়েছে বড় ও মাঝারি বহু শিল্প কারখানা। রয়েছে একাধিক সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখা হলেও এলাকার পিডিবি গ্রাহকদের অভিযোগ, কয়েক মাসের বেশি সময় ধরেই লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ তাঁরা। 

দিনের বেলা প্রতি ঘণ্টায় তিন-চারবার বিদ্যুৎ যায়-আসে। কখনো এই লুকোচুরি মিনিটে মিনিটে চলে চলে। বিশেষ করে গত কয়েকদিনে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। টানা বিদ্যুৎহীন থাকলে ফ্রিজের খাবার নষ্ট ও ব্যবসায়িরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

কর্ণফুলীর আলা উদ্দিন আরিফ ক্ষোভ প্রকাশ করে স্যোশাল মিডিয়ায় লিখেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রী মহোদয়কে নোবেল দেওয়া উচিত। শিকলবাহা মাষ্টারহাটের আবদুল্লাহ আল মামুন লিখেন, এই কেমন লোডশেডিং বুঝিনা। সারাদিন লোডশেডিং চলছে ছোট ছোট মাসুম বাচ্চারা গরমে অস্থির। বাচ্চা গুলো অসুস্থ্য হয়ে পড়বে। গরীবের আবার আইপিএস থাকে না, লোডশেডিং দেন ভালো কথা একেবারে ৩ ঘন্টা ৪ ঘন্টা দিয়ে দেন না, ২ ঘন্টা পর আসবে আবার ১০ মিনিট থাকার পরে আবার নিয়ে যায়। ১০ মিনিট ৩০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ দিয়ে লাভটা কি বলে মন্তব্য করেছেন।

শহরের আবাসিক-বাণিজ্যিক সবখানেই এখন বিদ্যুৎ নিয়ে এমন হতাশা শুরু হয়েছে। ভ্যাপসা গরমে আবাসিক এলাকার মানুষকে দুঃসহ যন্ত্রণায় পড়তে হচ্ছে। আবার বহু কলকারখানার চাকাও বন্ধ হয়ে থাকছে। জানতে চাইলে পটিয়া নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ বিভাগ) ইসমাইল হোসেন দিনে ও রাতের বেলা বিদ্যুতের যাওয়া-আসা করার গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তবে পিডিবির প্রকৌশলীরা আশা প্রকাশ করছেন শিগগিরই এ সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন।

আর//দৈনিক দেশতথ্য//৩১ জুলাই-২০২২//