কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ পোলের মাথায় ওঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারাত্মক দগ্ধ কলেজ শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান সুবাস (৩০) এর পরিবার থেকে এই অভিযোগ ওঠে। সুবাস বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সুবাসের পরিবার বলছে- ঘটনার সময় কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সদস্যগণ উপস্থিত থাকলেও বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করতে না বলার কারনেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিস চরমভাবে দায়িত্ব অবহেলার পরিচয় দিয়েছেন বলেও সুবাসের পরিবার মনে করে।
সুবাসের পরিবার সুত্র ছাড়াও ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর বেলা ১২ টার দিকে মোল্লাতেঘরিয়ায় বিদ্যুৎ পোলের মাথায় ওঠে কলেজ শিক্ষার্থী সুবাস। এ সময় স্থানীয় সাধারন জনগণ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যগণ নিচে অবস্থান করছিল। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের সদস্য এবং স্থানীয় জনগণ কেউই বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করার বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসকে জানায়নি। যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ হলে এই দুর্ঘটনা ঘটতো না। ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের উচিৎ ছিল বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করতে বিদ্যুৎ অফিসে কথা বলার।
সুবাস যখন বিদ্যুৎ পোলের মাথায় ছিল তখন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যগণ যদি তাকে উদ্ধার করতে পোলের মাথায় ওঠতো তাহলে তারাও এই দুর্ঘটনার শিকার হতো। তাই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের কার্যক্রম নিয়েও সুবাসের পরিবার প্রশ্ন তোলেন।
কলেজ শিক্ষার্থী সুবাস বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারাত্মক দগ্ধ হলে সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যগণ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঐদিনই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৬ তলায় এইচবিও-তে ২৬ নং বেডে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নাইমুর রহমান সুবাস শহরের হাউজিং বি-৩৪৪ নং বাসার সাবেক প্রধান শিক্ষক মৃত মনছুর আলীর পুত্র। সে কুষ্টিয়া সরকারী বিশ^বিদ্যালয় কলেজের ভুগোল বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র।
বিদ্যুৎ লাইন বন্ধের বিষয়ে কুষ্টিয়া ওজোপাডিকো লি: এর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপ চক্রবর্তী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কেউ জানায় নি। আমরা কোন ধরনের ম্যাসেজ পেলে অবশ্যই বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দিতাম। আমরা যেটুকু জানতে পেরেছি ঘটনার সময় বহু সাধারন জনগণ ছিল কেউই আমাদের কোন ধরনের ম্যাসেজ দেয়নি।
এদিকে কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত ফায়ার স্টেশন মাষ্টার আব্দুস সালাম ও সাব অফিসার মাহাফুজুর রহমান বিদ্যুৎ অফিসে না জানানোর বিষয়টি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিস অফিসে উপস্থিত হয়ে সহকারী পরিচালক জানে আলম অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি এবং পরবর্তীতে তার মোবাইল নম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ২৮,২০২২//

Discussion about this post