বিবাদমান দুটি গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের দ্ব›দ্ব এখন প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে আগামী নির্বাচনে নৌকার প্রতীক না দেয়ার দাবিতে জেলার গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেছে জেলা আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী।
সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পাল্টা প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে অপর পক্ষ। কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস ।
দুটি কর্মসূচীতে উভয়পক্ষ একে অপরের প্রতি বিষাধাগার করে কাঁদা ছোড়াছুড়ি বক্তব্য পেশ করেন।
মেহেরপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন নেতাদের হাতে পায়ে ধরে ভোটের মাঠে নামিয়েছিলেন। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা নৌকাকে জয়লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীত্বও দিয়েছে। অথচ ক্ষমতায় যাওয়ার পর সে কথা মনে রাখেননি। বিজয়ের পর পরিবারতন্ত্র কয়েম করেছেন। মূল্যায়ন করেননি কোন নেতা-কর্মীকে।
শুধু তাই নয়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচেন তার পছন্দের মানুষ নৌকার মনোনয়ন না পাওয়ায় নৌকার বিপক্ষে ভোট করেছেন। এমনকি নৌকার প্রার্থীদের হারিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে এনে দিয়েছেন। তাই আগামীতে আমরা তাকে আর নৌকার প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়নি। তাকে বাদে জেলার যে কোন নেতাকে নৌকার পক্ষে প্রার্থী করলে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন।
আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিয়াউদ্দীন বিশ্বাস বলেন, ফরহাদ হোসেন যদি নৌকার প্রার্থী হয় তাহলে নৌকায় ভোট দেব না। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে বলে এসেছি। তাই সকলকে এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার আহŸান জানান তিনি। এ ছাড়াও ফরহাদ হোসেনের ভাই ও তার আত্মীয় স্বজনদের দুর্ণীতি অপকর্ম তুলে ধরা হয়। বলা হয় এদের অত্যাচারে অনেকেই আজ গৃহত্যাগী।
জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশানের স ালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এম.এ.এস ইমন, যুব লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জেমস স্বপন মল্লিক, পৌর মেয়র ও জেলা যুব লীগের আহŸায়ক মাহফুজুর রহমান রিটনসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
এদিকে সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পাল্টা কর্মসূচীতে আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস বলেন, যারা বিরোধিতা করছেন তাদের মেরুদন্ড শক্ত নয়। যখন যে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় তাদেরই বিপক্ষে থাকে এ গ্রæপটি। তারা জনবিচ্ছিন্ন নেতা বলে দাবি করেন তিনি। আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কমিটি থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের সকল নেতা-কর্মী তাদের সাথে আছেন। তাদের নিয়ে আগামীতে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম শাহীন বলেন, যারা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন বা তার পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের সম্পর্কে যা রটানো হচ্ছে তা সঠিক নয়। তারা এক প্রকার মিথ্যাচার করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মী এখানে এক ছায়া তলে আছে।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাজ্জাদুল আনাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ৪ অক্টোবর ২০২৩

Discussion about this post