মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় দুই পরিবারের সম্মতিতে ভিডিও কলে
(ভার্চুয়াল) কাজীর উপস্থিতিতে বিয়ে করে।
এদিকে তিন বছর পর একি কায়দায় অন্যত্র বিয়ে করে প্রথম স্ত্রীর সাথে প্রতারনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে, রাজনগর থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার শেফালির (ছদ্মনাম) সাথে ফেইসবুকে পরিচয় হয় মহলাল গ্রামের মৃত বশির শেখের পুত্র জার্মান প্রবাসী মোহিমশেখের(৩৫)। তিন বছর ফেইসবুকের পরিচয়ের পর ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর
পারিবারিক ভাবে ঢাকায় বোনের বাসায় কাজীর উপস্থিতিতে
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
বিয়ের সময় শেফালির(ছদ্মনাম) পরিবারের নিকট থেকে বিবাহের সময় যৌতুক হিসাবে ৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়। এ সময় তার পরিবার তাকে ৩ ভরি ৬ আার স্বর্ণউপহার দেয়। পরবর্তীতে মুহিম শেখ ভিডিও কলে( ভার্চুয়াল) শেফালীর সাথে স্বামী স্ত্রীর আন্তরিক কথাবার্তা ও ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি করে। এর মধ্যে শেফালী তার স্বামী মোহিম শেখকে দেশে আসার প্রস্তাব দেয়। তখন মোহিম শেখ জানায় র্জামানিতে সে পূর্বে একটি রাশিয়ান মেয়েকে বিয়ে করেছিল। তার একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। সেই মেয়েটি জার্মান আদালতে তার উপর একটি মামলা করেছে। সেই মামলা নিস্পত্তি করতে টাকা লাগবে বলে তার নিকট থেকে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে তার মায়ের
নিকট থেকে আরো ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়। চলতি বছরের মে মাসে তাকে জানায় সে দেশে আসবে তার জন্য আরো ৫ লাখ টাকা তৈরি করে রাখার জন্য তাকে দিতে
হবে।
শেফালী টাকা দেওয়ার অপরাগতা প্রকাশ করলে মোহিম শেখ জানায়, সে অন্যত্র
বিয়ে করবে। পরবর্তীতে মোহিম শেখ ভিডিও কলে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ের ছবি
তার ইমুতে পাঠায়। বিষয়টি জানার পর শেফালী গত ২রা জুলাই তার শ্বশুর বাড়িতে
আসে। এখানে এসে সে জানতে পারে তার শ্বাশুরির সম্মতিতে ২য় বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
এব্যাপারে সে প্রতিবাদ করায় তাকে হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরে মোহিম শেখ তাকে সতর্ক করে যদি সে কোন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্রয় নিতে
যায় তবে ভিডিও কলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি, ভিডিও, সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে প্রকাশ করবে বলে হুমকি দেয়। এভাবে মোহিম শেখ তার সাথে প্রতারনা করার কারনে মোহিম শেখ,তার মা সরবান বিবি, বোন চম্পা বেগম, ভাগনি জেসি
বেগমকে বিবাদী করে রাজনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
রাজনগর থানায় অভিযোগের পর একে একে বেড়িয়ে আসছে মোহিম শেখের ভিডিও কলে
বারবার মা ও বোন গিয়ে আংটি পড়ানোর দৃশ্য। সিলেটের দয়ামীর এলাকার একটি
মেয়ে, রাজনগরের একটি মেয়ে সহ অনেক মেয়েকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে আংটি পরানো
হয়। ভিডিও কলে এই ভাবে চলছে বিবাহ বানিজ্য। ভিকটিম শেফালী বলেন, মোহিম
শেখের পরিবার ইসলামী শরিয়াহ মতে আনুষ্ঠানিক ভাবে আমার বিয়ে পড়ায়। আমার
সরল বিশ্বাসে সব কেড়ে নিয়েছে। আমার চাকরি ছিল, বিয়ের পর ওর বাড়িতে থাকতে গিয়ে মোহিম শেখের কথায় চাকরি ছেড়ে তাদের বাড়িতে চলে আসি। আমি এখন সব
কিছু হারিয়ে নিঃস্ব। তার এমন প্রতারনার বিচার চাই।
মোহিম শেখের মা সারবান বিবি শেফালীর বিয়ের কথা স্বীকার করেন। তবে শেফালীর বিভিন্ন দোষের কারনে তার ছেলে তাকে ত্যাগ করেছে বলে জানান।
এব্যাপারে রাজনগর থানার ওসি বিনয় ভূষন রায় বলেন, বাগেরহাটের মেয়ে অভিযোগ
দিয়েছিল। অভিযুক্ত মোহিম শেখ দেশে নেই। এছাড়াও অভিযোগটি থানায় নেওয়ার
বিষয় নয়। মামলাটি আদালতে দেওয়ার জন্য বলেছি। তবে মেয়েটি তাদের দেওয়া টাকার যে প্রমান আছে তা দিয়ে টাকার মামলা দিলে আমি সে বিষয়ে মামলা নিবো
ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post