সরকারি বরাদ্দের ‘বাথরুমসহ গভীর নলকূপ, ওয়াশব্লক ও কালভার্ট দেবার প্রলোভন দেখিয়ে ৪লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আরো চার জনের বিরুদ্ধে।
এই চারজন হলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এসএম নুনু মিয়া ও তার পিএস মিয়াজানেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা, পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য ও দৌলতপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দবির মিয়ার ।
সরকারি গভীর নলকূপ, ওয়াশব্লক ও কালভার্ট দীর্ঘদিনেও না পাওয়ায় বার বার যোগাযোগ করে টাকাও ফেরত পাননি ভূুক্তভোগীরা। ফলে ন্যায় বিচারের আশায় মঙ্গলবার (২২আগষ্ট) সিলেটের জ্যুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বিশ্বনাথ ৩নং আমলী আদালতে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া ও তার পিএস দবিরসহ ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন জামাল আহমদ নামের এক ভোক্তভোগী।
তিনি উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি এবং ওই ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের মৃত মখন মিয়ার ছেলে।
মামলার অপর দুই আসামির একজন হচ্ছেন পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য দবির মিয়ার মা সফুল বিবি। আর অপরজন হচ্ছেন সুহেল শিকদার নামের এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি।
মামলার শুনানী শেষে ওই আদালতের বিচারক দিলরুবা ইয়াসমিন অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করতে সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামানকে দায়িত্বভার দিয়েছেন, (মামলার সিআর নং ৩১৬/২৩)।
মামলার বাদী জামাল আহমদের কাছ থেকে জানাগেছে, খাজান্সী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি হওয়ায় অভিযুক্ত দবির মিয়ার সঙ্গে তার পূর্ব পরিচয় রয়েছে। সেই সুবাদে ২০২২সালের অক্টোবর মাসে দবিরের কথামতে উপজেলা চেয়ারম্যান নুনু মিয়ার সঙ্গে কথা বলে ‘বাথরুমসহ গভীর নলকূপ, ওয়াশব্লক ও কালভাটর্’র জন্য আবেদন করেন তিনি। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পিএসের সঙ্গে চুক্তি মতে ১১টি পরিবারের কাছ থেকে ৩০হাজার টাকা করে ওয়াশ ব্লকের জন্য ফি-দেন। অন্য একটি পরিবারের নিকট থেকে আরও ২০হাজার টাকা, তেঘরি মসজিদের জন্য ১০হাজার টাকা এবং ৪টি কালভার্টের জন্য আরও ৩০হাজার টাকাসহ মোট ৩লাখ ৯০হাজার টাকা জমা দেন।
ওই টাকার মধ্যে ১লাখ ৪০হাজার টাকা দবির মিয়ার কাছে এবং আরও ১লাখ ৪২হাজার টাকা দবির মিয়ার মা সুফল বিবির কাছে জমা দেন তিনি। এসময় দবির মিয়ার কথা অনুযায়ী ওয়াশব্লকের জায়গা পরিদর্শনে যাওয়া সুহেল শিকদার নামের এক ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়দানকারীকে আরও ৮ হাজার টাকা দেন। কিন্তু টাকা প্রদান ও জায়গা পরিদর্শন শেষে বছর ঘুরে এলেও বরাদ্দ পাননি তিনি। অবশেষে দবির মিয়ার বাড়িতে গেলে দবির মিয়ার মা সফুল বিবি দবির মিয়ার স্বাক্ষরিত ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তারিখের ইসলামী ব্যাংক বিশ্বনাথ শাখার ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার ওভাররাইটিং করা একটি চেক দেন। পরে আবারও টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন চেয়ারম্যান ও তার পিএস, এমন অভিযোগও করেন মামলার বাদী জামাল আহমদ।
এপ্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও উপজেলা চেয়ারম্যানের পিএস দবির মিয়া মুঠোফোন রিসিভ করেননি। তবে, উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেছেন, এই ঘটনা এবং মামলায় বর্ণনার ঘটনার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অঞ্জন দে বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের জ্যুডিসিয়াল মেজিষ্ট্রেট বিশ্বনাথ ৩নং আমলী আদালতের বিচারক দিলরুবা ইয়াসমিন’র আদালতে এ মামলাটি করেন ভূক্তভোগী জামাল আহমদ। এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষী রয়েছেন। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেওযা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান পিপিএম বলেন, এসংক্রান্ত কোন আদেশ এখনও তার কাছে পৌঁছায়নি।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/

Discussion about this post