Print Date & Time : 26 August 2025 Tuesday 4:39 pm

বিয়ানীবাজারে শিশু হত্যায় চাচির যাবজ্জীবন

সিলেট অফিস :
সিলেটের বিয়ানীবাজারে দেবরের শিশু ছেলেকে হত্যা করে গুমের দায়ে সেই চাচিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে সেই ঘাতক চাচিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৮ মে) সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে পেনাল কোডের আরেকটি ধারায় তাকে ৭ বছরের কারাদ-, ১ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। উভয় সাজা একত্রে চলার নির্দেশ দেন বিচারক।
দ-প্রাপ্ত সুরমা বেগম (৪১) সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার উত্তর আকাখাজনা গ্রামের রুনু মিয়ার স্ত্রী। আর হত্যার শিকার ৩ বছরের সায়েল আহমদ তার দেবরের ছেলে।
এই মামলায় অপর দুই আসামি নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিম ও রুনু মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৭ জুন ভোরে মামলার বাদী বিয়ানীবাজার উপজেলার উত্তর আকাখাজানা গ্রামের খসরু মিয়ার শিশু সন্তান আরিফ আহমদ (৫) ও সাড়ে ৩ বছরের সায়েল আহমদ আম কুড়াতে যায়। একপর্যায়ে চাচি সুরমা বেগমের অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে সবার কাছে বলে দেবে বলায় বলে জানায় দেবরের ছেলে শিশু সায়েল আহমদ। প্রমাণ না রাখতে শিশুটিকে হত্যার পর মরদেহ গুম করতে ঘরের বাথরুমে প্লাস্টিকের ড্রামে কম্বল দিয়ে মোড়ে রেখে দেন সুরমা।
ওই দিন সকাল ৭টার দিকে আরিফ ফিরলেও সায়েল ঘরে না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পুকুরে জাল ফেলেও না পাওয়ায় সুরমা বেগমকে সাহেলের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তার কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হয়। এক পর্যায়ে সুরমা বেগমের ঘরের বাথরুমের প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় সাহেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ সুরমা বেগমকে আটক করে।
এরপর পুলিশকে সুরমা বেগম জানান, অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে সবার কাছে বলে দেওয়ার কথা বলায় ভয়ে তিনি দেবরের ছেলে সায়েল আহমদকে হত্যা করেন এবং পরে মরদেহ ঘরের বাথরুমে প্লাস্টিকের ড্রামে কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে রাখেন।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা খসরু মিয়া ২০২০ সালের ৮ জুন সুরমা বেগম, তার পরকীয়া প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিম ও স্বামী রুনু মিয়াকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ৩ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানি ও ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রবিবার বিচারক রায়ে সুরমা বেগমকে দ-িত করেন।
সুরমার পরকীয়া প্রেমিক বিয়ানীবাজারের চারখাই গ্রামের কামাল মিয়ার ছেলে নাহিদুল ইসলাম ওরফে ইব্রাহিম (২৯), আকাখাজনা গ্রামের রইছ আলীর ছেলে রুনু মিয়ার (স্বামী) অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. নিজাম উদ্দিন।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//