কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ কারিগরপাড়া এলাকার আঃ বারির ছেলে নাহিদ হাসান কাজল। দীর্ঘ ৩ বছর ধরে একই এলাকার একটি মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। যাতে অন্য কোথাও বিয়ে না করতে পারে সে জন্য অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধারণ, এনআইডি কার্ড, জন্মনিবন্ধন, টিকা কার্ড, পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার সনদ নিজের জিম্মায় রেখেছে কাজল। বিয়ে করবে বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে মা ও দুই বন্ধুকে দিয়ে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী তরুণী। কাজল তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও জানান ভুক্তভোগী তরুণী। তিনি বলেন কাজল আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। এলাকায় সামাজিকভাবে হেয় করেছে আমাকে ও আমার পরিবারকে।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, তিন বছর ধরে কাজলের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মাঝেমাঝেই আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতেন কাজল। গত রোজার দুই তিন দিন আগে আমাদের বাড়ির পাশে সে আমার সাথে সর্বশেষ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। গত ৬ মাস আগে কাজল আমার কাছ থেকে এনআইডি কার্ড, জন্মনিবন্ধন, টিকা কার্ড, পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার অরিজিনাল সনদ নিয়ে নেয়। সে কয়েকদিন আগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের চাকরি পেয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাজল ফেসবুকে আমাকে ম্যাসেজ দিয়ে তার বাড়ির ছাদে ডাকে। আমি সেখানে গিয়ে দেখি সে তার দুই বন্ধুর সাথে ছাদে বসা। এরপর কাজল আমাকে তার মায়ের সাথে কথা বলতে নিচে রুমে নিয়ে এরপর তার মা আমাকে বলে কেন আমার বাড়িতে এসেছিস? আমি উত্তরে বলি আপনার ছেলে আমাকে ডেকে নিয়ে এসেছে। আমি আপনার ছেলেকে বিয়ে করবো। এরপর কাজলের মা শিরিনা ও তার দুই বন্ধু বাপ্পী ও মানিক আমাকে মারধর করে বাড়ির বাইরে ফেলে দিয়ে যায়। এরপর সেখানে পুলিশ আসে। আমরা সেই রাতেই থানায় যায়। থানার অফিসার পরেরদিন থানায় যেতে বলে। এরপর আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে আটটার দিকে আমি আবার কাজলের বাড়িতে যায়। তখন কাজলের মা আমাকে রড দিয়ে মারধর করে। এতে আমার হাতে প্রচন্ড আঘাত লাগে। এসময় কাজলের মা আমাকে বলে, আমার আরেক ছেলে ম্যাজিস্টেট। আমাদের কিছুই করতে পারবি না। ভুক্তভোগী তরুণী আরো বলেন, আমার জীবন নষ্ট করে ফেলেছে। আমি ওকে বিয়ে করব, না হলে আত্মহত্যা করবো। আমি ওকে বিশ্বাস করে সবকিছু দিয়েছি। আমার কানের দুল ও পায়ের নূপুর ওকে দিয়ে দিয়েছি। কাজল এখন আমাকে হুমকি দিচ্ছে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও মানুষের ফোনে ফোনে ছড়িয়ে দেব।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাহিদ হাসান কাজল এর ব্যাবহিত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এই কাজল ইতিপূর্বে আরো একটি তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে। কাজলের ভাই প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বলে পাড় পেয়ে যায়।
চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মঞ্জু জানান, বিষয়টি শুনেছি। আমিও গত মঙ্গলবার কাজলের বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরে পুলিশকে খবর দি। পুলিশ এসে মেয়েটাকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেন।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২৮ এপ্রিল ২০২৩

Discussion about this post