রচয়িতা: বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী।
চট্টগ্রাম জেলা বার এসোসিয়েশন এর সাবেক সম্পাদক ও সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আলহাজ্ব আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী রচিত” কালীপুর ইজ্জত নগর সমৃদ্ধ অতীত ” – গ্রন্থটি তাঁর মেধা,মনন, ভাষা, ইতিহাস ও সাহিত্যিক মানের বৈশিষ্ট্য মন্ডিত।
পুস্তকটি বহু অজানা ইতিহাসের উৎস, গবেষণা কর্ম যা লেখককে ইতিহাসের পাতায় অমর করে রাখবে। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে আইনের কঠিন ও জটিল জগতে বিচরণকারী একজন দক্ষ আইনবিদ ও পেশাজীবি কতৃক রচিত অমূল্য গ্রন্থ টি মূদ্রন ও প্রকাশনায় রয়েছে প্রিয় কবি ও বরেণ্য সাহিত্যিক Manirul Manir এর প্রকাশনা সংস্থা- খড়িমাটি।
চমৎকার মলাটের উপর প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী আল নোমান। বইটি লেখকের মা জননী মহীয়সী নারী মরহুমা মমতাজ মহল বেগম কে উৎসর্গ করা হয়েছে যার প্রকাশক মিসেস রৌশন আফরোজ বেগম। বইটির মূল্য ২৫০/- টাকা। প্রাপ্তি স্থান বাতিঘর, অন লাইন শপ রকমারি ডটকম সহ যেকোন অভিজাত পুস্তক বিপনি।
লেখক এমন এক আইনযোদ্ধা যিনি ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম জেলা বার এসোসিয়েশন এর বা এর বিজ্ঞ সদস্যদের পেশাগত স্বাধীনতা অধিকারের বিরুদ্ধে যখনই আক্রমণ হয়েছে তখনই তিনি দলমত এর উর্ধ্বে উঠে হুংকার দিয়েছেন। দলমত নির্বিশেষে এডভোকেট দের শ্রদ্ধা ভালোবাসার ব্যাক্তিত্ব তিনি। আদালতের সামনেও সত্যি কথাটি স্পষ্টভাবে যথাযথ সম্মান প্রদর্শনে যুক্তি দিয়ে সাহসীকতার সাথে বলতে পারেন তিনি।
তাঁর রচিত গ্রন্থটির মুখবন্ধ লিখেছেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মেজর (অব.)মুহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম। প্রিয় জন্মভূমি মায়াবী জনপদ বাঁশখালির কালীপূর ইজ্জত নগর এর অপ্রকাশিত ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে তিনি একটি ঐতিহাসিক কর্ম সম্পাদন করেছেন। যা আগামী প্রজন্মের কাছে জাতিসত্বার পথরেখা সৃষ্টি করবে, ইনশাআল্লাহ।
তাঁর গবেষণায় উঠে এসেছে ঐ গ্রামের নামকরণের ইতিহাস, হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ঐতিহ্য, পীর আউলিয়ার জীবন কথা, বংশ পরিক্রমা, স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তিত্বদের কথা ও অবদান এককথায় পুস্তকটি একটি চমৎকার গবেষণা কর্ম যা শুধু ইতিহাস নয় একটি এলাকার নৃতাত্বিক গবেষণা ও স্মৃতিময় গদ্য কথাও বটে ।
সারা জীবন সাহিত্য কর্ম থেকে দূরে থাকা মানুষটি ৭২ বছরের পরিনত বয়সে এসে প্রমান করলেন আইনবিদগণ সমাজের প্রতিটি সেক্টরে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাখেন। ১৯৫০ সালের ২৭ জুলাই জন্মগ্রহনকারী লেখকের শৈশব কাটে নিজ গ্রামে।মরহুম মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর ঔরষে এবং মহীয়সী নারী মরহুমা মমতাজ মহল বেগমের গর্ভে জন্ম লাভ করেন তিনি।
এরপর ৮ম শ্রেনীতে সরকারি মুসলিম হাই স্কুলে ভর্তি হওয়া, ১৯৬৬ সালে এসএসসি,১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি,১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন শেষে ওমরগণি এমইএস কলেজে অধ্যাপনা, কিছুদিন বিদেশি কোম্পানিতে চাকুরী ও ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে এলএল.বি ডিগ্রি অর্জন, ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম বার-এ এবং ১৯৮১ সালে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের তালিকা ভুক্তি ছিল তাঁর জীবন সংগ্রামের ইতিহাস।
ব্যাক্তিগত জীবনে জনাব আনোয়ার-রওশন দম্পতির দুই সন্তানের একজন চিকিৎসক অপর জন এডভোকেট। সম্প্রতি তিনি কোর্ট হিল ও চট্টগ্রাম বার এসোসিয়েশন এর সঠিক ইতিহাস ঐতিহ্য প্রেস মিডিয়ায় তুলে ধরে সকল বিকৃতির অবসান ঘটিয়েছেন। ৬৮-৬৯ এর গণ আন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলন সহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। আমি লেখকের নেক হায়াৎ, সুস্বাস্থ্য ও ইহকাল পরকালের সার্বিক সাফল্য এবং পুস্তকটির বহুল প্রচার প্রত্যাশা করি।
রিভিউ লেখকঃ এডভোকেট, মানবাধিকার ও সুশাসন কর্মী।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ১৬,২০২২//