সুদীপ্ত শাহীন, লালমনিরহাট ।। লালমনিরহাটের বুড়িমারী আন্তর্জাতিক মহাসড়ক এখন যেন মরণফাঁদ। সড়কটির বিভিন্নস্থানে খালে কন্দে ভরা।
মাত্র ২৫ ফিট চওড়া এই রান্তায় দৈত্য আকৃতির ডবল ক্যারিয়ার ট্রাক ভ্যানে অভার লোডিং পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। প্রায় দুই যুগ ধরে রাস্তাটি ফোরলেন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে দ্বিতীয় বৃহত্তর স্থলবন্দর বুড়িমারী সাথে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি ফোরলেন করার কাজ আটকে আছে। এটি এখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে রাজনৈতিক ইস্যূতে পরিণিম হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোর নেতা কর্মীরা প্রকাশ্য বলছে এতো উন্নয়ন হয়েছে দেশে কিন্তু লালমনিরহাটের উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধকতা এই রাস্তাটি সেটা আজো নির্মাণ করা হয়নি। দ্রæত ফোর লেন রাস্তা নির্মানের দাবি উঠেছে।
১৯৮৮ সালে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে বুড়িমারী স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা হয়। এই স্থলবন্দরটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর স্থলবন্দর। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানে এই স্থলবন্দও দিয়ে পণ্য আদমানি রফতানি হয়ে থাকে। এই বুড়িমারীতে রয়েছে ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের প্রধান দ্বিতীয় ইমেগ্রেশন রুট। প্রতিদিন কয়েক শত যাত্রী এই রুট দিয়ে ৪টি দেশে যাতাযাত করে থাকে। এই রাস্তাটি দেশের ব্যবসা বাণিজ্য ও যাতাযাতে গুরুতপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলছে। এই রুটটি ব্যবহার করে ভিনদেশী পর্যটনকরা এসে যাতাযাত ব্যবস্থার র্দুদশা দেশে তাদের কাছে দেশের সার্বিক উন্নয়ন প্রশ্নে মুখে পড়ে।
বুড়িমারী লালমনিরহাট মহাসড়কটি লালমনিরহাট জেলার একমাত্র মহাসড়ক ও প্রধান সড়ক। যাহা দ্বারা জেলা সদরের সাথে আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম মিলে ৫টি উপজেলার সাথে যোগাযোগ রক্ষা হয়। এই সড়কের পাশেই ৫টি উপজেলার দপ্তর ও হাসপাতাল রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের অভাবে খালে খন্দে পরিণিত হয়েছে। একদম চরাচলের অনুপোযুগী। দীর্ঘ একশত ২৫ কিলোমিটার এই রাস্তাটিতে কিছুদুর পর পর ভাঙ্গাচুড়া, খালে খন্দে ভরা। বৃস্টি হলেই একদম চলাচরের অনুপোযুগী হয়ে পড়ে যায়। এ কারণে এই রাস্তাটিতে প্রায় প্রতিদিন ছোট বড় দূর্ঘটনা লেগেই থাকে। গত দুই মাসে এই সড়কে শিক্ষার্থী, শিশু, গৃহবধুসহ প্রায় ১০ জনকে অকালে প্রাণ হারাতে হয়েছে। পঙ্গুত্ব বরণ করেছে কমপক্ষে ৫০ জন।
বোঝাই ট্রাক ঝুঁকি নিয়ে চলছে। এই মহাসড়কে সবচাইতে ঝুঁকিতে রয়েছে মোটরসাইকেল আরোহী, রিক্সা, ভ্যানের যাত্রী ও চালক। ছোট ছোট যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যানবাহন। স্বল্প প্রস্থের রাস্তায় দৈত্যাকার দ্রুতগামী যানবাহন গুলোকে সাইড দিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সড়কে প্রান হারাতে হচ্ছে নিরীহ মানুষদের।
দীর্ঘ সংস্কারের অভাবে খালেখন্দে ভরে গেছে রাস্তাটি। এতে করে দূর্ঘটনাও বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। গত দুই মাসে এই সড়কে শিশু, নারী, শিক্ষার্থী সহ প্রায় ১০ জনকে প্রান দিতে হয়েছে। পঙ্গুত্ব বরণ করেছে প্রায় অর্ধশত। দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর ধরে এই রাস্তাটি ফোর লেন করার পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন হচ্ছেনা।
সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব আলম জানান, খুবশীঘ্র প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে। ৭টি হাটবাজারের পাশের রাস্তা মেরামত ব্যয় ১৬ কোটি টাকা, রাস্তা সম্প্রসারণ ব্যয ১৪ কোটি টাকা , ১৬ কোটি টাকা ব্যযে কার্পেটিং করা হবে। এছাড়াও ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ আশ^স্ত করেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি ও ডলারের দাম বৃদ্ধিও ফলে ঠিকাদার সরকারি দামের পূর্ণমূল্যায়ণের আবেদন করেছে। তারপরেও ঠিকাদার দুই-চার দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবে। বৃষ্টি বাদলের কারণে কাজটি শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//১৩ সেপ্টেম্বর-২০২২