পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শেখ কামাল সেতুর নিচে চলছে সরকারী জায়গা দখলের হিড়িক। হাসপাতাল গেট থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে একটি প্রভাবশালী মহল টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ঘর তুলে দিচ্ছে।
কেউ কেউ আবার ঘর তুলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে ঘর সহ পজেশন বিক্রী করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবৈধভাবে নির্মিত এসব ঘরগুলোকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করার পাশাপাশি রাতের নিস্তব্দতায় বসছে মাদক সেবনের আড্ডা। এছাড়া শেখ কামাল সেতুর নীচে অবৈধ পার্কিং করা হচ্ছে রেন্ট-এ-কার। এতে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ায় দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভোগান্তিতে পড়ছে হাসপাতালে চিতকৎসা নিতে আসা রোগীরা। অথচ রহস্যজনক কারনে সওজ কর্তৃপক্ষের এ অবধৈ স্থাপনা উচ্ছেদে দৃশ্যমান কোন উদ্দোগ নেই।
সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে শেখ কামাল সেতুর নীচের দু’পাশে একাধিক অবৈধ ঘর উত্তোলন করা হচ্ছে। হাসপাতাল গেট থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত এখন দৃশ্যমান এসব অবৈধ স্থাপনা। অথচ কয়েক বছর আগে ভয়াবহ এক অগ্নি কান্ডে ব্যাপক ক্ষতি হয় এ সেতুর। সেসময় সকল ধরনের দোকান-পাট সরিয়ে নেয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কিন্তু আবার সেখানে অবৈধ ঘর তোলার প্রতিযোগীতায় নেমেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বেশ ক’জন রোগীর স্বজন বলেন, রাস্তার দু-পাশে অবৈধ দোকানপাট ও গাড়ি পার্কিং থাকায় আমাদের যাতায়তে খুব অসুবিধা হচ্ছে। অনেক সময় জরুরী রোগী নিয়ে হাসপাতালে ঢুকতে গেটের সামনে কৃত্রিম যান জটের মধ্যে পড়তে হয়।
কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতি কলাপাড়া উপজেলা শাখা’র সাধারন সম্পাদক মো. জসিম গাজী বলেন, প্রতিনিয়ত এখানে অবৈধভাবে ঘর তোলা হচ্ছে। এছাড়া রেন্ট-এ-কার এর অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য বিপাকে পড়তে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।
এগুলো এখান থেকে অপসারন করে গাড়ি পার্কিয়ের একটি স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে সওজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নেয়ার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, সেতুর নিচে জায়গা দখল করে অবৈধ দোকান ঘর উত্তোলন ও গাড়ি পার্কিংয়ের কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দীর্ঘদিন সড়কে পাইপ ফেলে চলছে বালু ব্যবসা, দুর্ভোগে পথচারী সহ যান চালকরা গোফরান পলাশ, কলাপাড়া: সড়ক গুলো যেন অভিভাবকহীন। ২০-৫০ মিটার পরপর ড্রেজার ব্যবসায়ীরা সড়কের উপর বালুর পাইপ ফেলে দু’পাশে বালুর বস্তা দিয়ে দয়া করে যেন যান চলাচলের সুযোগ দিচ্ছে। এতে ব্যক্তিমালিকানাধীন নীচু জায়গা ভরাটে বালু বিক্রী করে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও দূর্ভোগে
পড়ছে পথচারী সহ যান চালকরা। এমন চিত্র যত্র তত্র দেখা যাচ্ছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রথম শ্রেনীর পৌর শহরে। দীর্ঘদিন ধরে সড়ক আটকে বালু ব্যবসায়ীদের এমন দৌরাত্ম্য চললেও পৌর প্রশাসন রহস্যজনক কারনে নিশ্চুপ। এনিয়ে তাদের দায়সারা গোছের বক্তব্য কেউ অভিযোগ করেনি। পৌরসভার অনুমতি ছাড়া সড়কের উপর পাইপ ফেলে সড়ক আটকে তারা এটা পারে না।
শহরের ৩নং ওয়ার্ডের রহমতপুর এলাকা, সমাজকল্যান-রহমতপুর-বাসষ্ট্যান্ড চৌরাস্তা সড়কে এমন অবস্থার যেন অবসান নেই। একটি প্রভাবশালী মহল মাসের পর মাস ধরে স্থাপনা তৈরীতে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন নিচু জায়গা ভরাট করছে।
আর ড্রেজার ব্যবসায়ীরা শহর সংলগ্ন আন্ধারমানিক ও দোন নদীতে বালু বোঝাই জাহাজ রেখে সড়কে পাইপ ফেলে পাইপের মাধ্যমে বালু ফেলছে ১-২ কি.মি.দূরত্বের স্থানে। এক মালিকের জায়গা ভরাট হলে সড়ক থেকে পাইপ না সরিয়ে অপর মালিকের জায়গা ভরাটে যোগাযোগ করছে তারা। ১৫ দিন, ১ মাস বালু সরবরাহ বন্ধ থাকলেও লেবার খরচ সাশ্রয়ে সড়ক থেকে অপসারন করা হচ্ছে না বড় বড় সাইজের এ পাইপ গুলো। যান চলাচল, পথচারীদের দুর্ভোগ তারা আমলেই নিচ্ছেন না। ফলশ্রুতিতে এসব পাইপে ধাক্কা লেগে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে বাই সাইকেল, মোটর সাইকেল, রিকশা, অটো, প্রাইভেট, মাইক্রো চালকরা। মাঝে মধ্যে দু’এক পথচারী হোঁচট খেয়ে আহত হচ্ছে। বেশী দুর্ভোগে পড়ছে প্রসূতি নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা।
পৌরশহরের অটো চালক সেন্টু মিয়া বলেন, বালুর পাইপের কারনে রহমতপুর এলাকায় ঠিকমত গাড়ী চালাতে পারছিনা। প্রায়শ:ই যাত্রীরা আহত হচ্ছে। সেদিন এক সন্তান সম্ভবা মহিলা হাসপাতালে যাওয়ার পথে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পাইপের উপর দিয়ে গাড়ী ওঠা নামায় তার পেটের বাচ্চা উল্টে যাওয়ায় ভীষন ব্যথায় মহিলা কান্না কাটি শুরু করে। পরে জেনেছি তার জরুরী সিজার করতে হয়েছে।
বালু ব্যবসায়ী তৈয়বুর রহমান বলেন, ’যেখানে পাইপ ফেলা আছে সেখানে আর ১ জাহাজ বালু লাগবে। ১০-১২ দিনের মধ্যে জাহাজ এলে বালু ফেলে পাইপ সরানো হবে।’
কলাপাড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির বলেন, ’কেউ তো এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ’পৌরসভার অনুমতি ছাড়া সড়ক আটকে বালু ব্যবসায়ীরা এটা পারে না। সড়ক থেকে বালুর পাইপ অপসারন করলে প্রভাবশালীরা এসে তদ্বির শুরু করে।’
কলাপাড়া ইউএনও মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ’বালুর পাইপ ফেলে সড়কে স্বভাবিক
চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির এ বিষয়টি এখনও আমার চোখে পড়েনি। এ বিষয়ে
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ১৮,২০২৩//

Discussion about this post