
জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী শিশু জান্নাত। কথা বলতে পারেনা। হাতে-পায়ে নেই কোনো শক্তি। চলাফেরায় অক্ষম। বর্তমানে তার বয়স ৬ বছর। নিজে নিজে বসতে পারেনা, দাঁড়াতে পারেনা, পারেনা হাঁটতে। তবুও মুখভরা হাঁসি নিয়ে বাড়ির উঠোনের এক কোণায় সারাদিন প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে, মাটিতে শুয়ে দিন কাটে শিশু জান্নাতের।
ময়মনসিংহের নান্দাইলে খারুয়া ইউনিয়নের কয়ারপুর গ্রামের হতদরিদ্র রাজিব ও নাজমিনা দম্পতির শারীরিক ও বাক-প্রতিবন্ধী শিশু জান্নাতকে শারীরিক অক্ষমতা ঠেলে দিয়েছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। এক ভাই এক বোনের মধ্যে জান্নাত বড়।প্রতিবন্ধী জান্নতের কপালে এখনো জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা ।
সরেজমিনে শিশু জান্নতের নানার বাড়ী নাগপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, শিশু জান্নাতকে একটি প্লাস্টিকের চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে কেউ নেই। এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখছে। কাছে কাউকে না পেয়ে কাঁদছে সে। শিশুর মা ছুটে এসে মেয়েকে কুলে নিতেই কান্না থেমে যায়।
প্রতিবেশী শিশুরা যখন স্কুলে যায় তখন সারাদিন প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে, মাটিতে শুয়ে দিন কাটে জান্নাতের। ফ্যাল ফ্যাল করে সবার দিকে চেয়ে থাকে সে। বাবা-মা, নানা-নানী, প্রতিবেশী আর আত্মীয়- স্বজনদের কোলে থেকেই দিন পার হয় তার। নিজের চলার সামর্থ্যটুকু তার নেই।
দিনমজুর বাবা রাজিবের পক্ষে মেয়ের জন্য একটি হুইল চেয়ার কিনে দেয়া সম্ভব হয়নি। এখনো জান্নাতের কপালে জুটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা। দিনমজুরির অল্প উপার্জনে সংসার চলে কোনো রকমে। নুন আনতে পানতা ফুরায় সংসারের অবস্থা।
জান্নাতের নানী জোসনা আক্তার বলেন,“ আমার মেয়ের ঘরের প্রথম নাতনি প্রতিবন্ধী। আমার এইনে থাহে।আমি অনেক কষ্টে দেহাশুনা করি।তার বাপের কিছু নাই। যদি পারঅইন একটা কার্ড কইরা দেইন।একটু সাহায্য করঅইন নাতিনডারে চিকিৎসা করাইতাম। থাহুনের জন্য সরকারের কাছে একটা ঘর চাই।”
এবিষয়ে স্থানীয় খারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত ভূঁইয়া মিন্টু বলেন, শিশুটির বয়স ৬ বছর না হওয়ায় এতোদিন কার্ড হয়নি। এখন বয়স হলে তাকে ভাতার ব্যবস্থা করে দিতে পারবো। এরমধ্যে তাকে একটি শিশু কার্ড করে দিয়েছি।
প্রতিবন্ধী শিশু জান্নাতকে কেউ হুইল চেয়ার দেয়ার আগ্রহ থাকলে তার নানা শাহজাহানের সাথে ০১৯২৪১২৫৬০৫ এই মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারবেন।
রাজা/দৈনিক দেশ তথ্য//সেপ্টেম্বর ০৬,২০২২//