ওপেলিয়া কনি:
কুষ্টিয়ার খাদ্য ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত উঠেছিল। কারণ ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার হয়েছিল, কুষ্টিয়ায় আসছে ভেজাল খাদ্য পরীক্ষার চলমান ল্যাবরেটরি। খাদ্যপণ্যে ভেজাল ধরে ফেলবে নিমেষেই।
ভেজাল ধরা সেই মোবাইল ল্যাবরেটরি ভ্যান কুষ্টিয়ায় এসেছিল। প্রথমদিনে মঙ্গলবারই জানা গেল ৪ কোটি টাকার এই ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষাগার কাজ করছে না। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জেলা কর্মকর্তা জানালেন, আরও কিছু যন্ত্রাংশ সংযোজন, কেমিকেল ও রি এজেন্ট আনার পর ল্যাবরেটরি ভ্যানটি আবারও কার্যক্রম শুরু করবে।
সোমবার (৩ জুন) কুষ্টিয়া শিল্পকলায় বিভাগীয় পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা হয়। সেখানে দেখানো হয় মোবাইল ল্যাবরেটরি ভ্যানটি। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান সে সময় জানান, দুধ, মধু ও বিভিন্ন ধরনের মসলায় ভেজাল ধরাসহ ৩১ ধরনের পরীক্ষা এই ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরিতে করা যাবে।
মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের লাল মোহাম্মদ ওয়েল মিল ও মৌবন রেস্টুরেন্ট, শিশির বেকারীসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে ল্যাবরেটরি ভ্যানটি নিয়ে অভিযান চালানো হয়।
এসব পরীক্ষায় সবধরনের পণ্যের রেজাল্ট পাওয়া যায়নি। দুএক জায়গায় অসঙ্গতি মিললেও নেওয়া হয়নি শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা।
কুষ্টিয়ার নিরাপদ খাদ্য অফিসার সজিব পাল বলেন, আমাদের ল্যাব এখনো পরিপূর্ণ নয়। পরিপূর্ণ হলে রেডিমেট খাবারও টেস্ট করা যাবে।
তিনি জানান, ল্যাবরেটরি ভ্যানটি আজ (মঙ্গলবার) ঢাকায় চলে যাবে। সেখান থেকে পরিপূর্ণ হয়ে আসার পর সব ধরনের খাদ্যদ্রব্য পরীক্ষা করা যাবে। ল্যাবরেটরি ভ্যান ফিরে এলে এটি কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ হয়ে খুলনা যাবে। ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার প্রতিনিয়ত রাউন্ড আকারে খুলনা বিভাগে তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একটি জেলায় ২-৩ দিন করে অবস্থান করবে ভ্যানটি।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, ভ্যানটি কুষ্টিয়া জেলা ঘুরে মেহেরপুরে যাবে। এখন কী কারণে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে সে সম্পর্কে আমার কাছে তথ্য নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিবেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন এবছরে এ রকম ৭টি ভ্যান কেনা হয়েছে সারা বাংলাদেশের জন্য। আর আগে আরেকটি ছিলো। একেকটি ভ্যানের পেছনে খরচ হয়েছে ৪ কোটি টাকা।
পরে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া ফোনে আরো জানান, ভ্যানটি ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। এর জন্য কিছু রি-এজেন্ট ও কেমিকেল দরকার, তা ঢাকা থেকে পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন কিছু টেস্টের ফলাফল তাৎক্ষণিক পাওয়া যায় না। ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়।
এদিকে সবশেষে আপডেট জানার জন্য ফোন করা হলে জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার সজিব পাল আর কল রিসিভ করেন নি।
চার কোটি টাকায় কেনা একটি মাত্র ল্যাবরেটরি ভ্যান। এই ভ্যান সমগ্র খুলনা বিভাগে কয় কোটি টাকার ভেজাল খাদ্যপণ্য আটকাতে পারবে? এর কায্যক্রম কয়দিন টিকে থাকবে? তা এখন কেবলই অপেক্ষার বিষয়।
সিন্ধু//দৈনিক দেশতথ্য//১১ জুন,২০২৪//

Discussion about this post