ভেড়ামারা প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা মোকারিমপুর ইউপির ভূমি অফিসের তহসিলদার শরিফুল ইসলামের ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ ভুক্তভোগীরা। ইচ্ছামতো সময় নিয়ে ও অতিরিক্ত টাকা ছাড়া তিনি কোন কাজই করেন না বলে অভিযোগ করেছেন সেবা গ্রহীতারা।
এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগপত্র দিয়েও তার বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ভূমি মালিকগণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভূমি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, দৌলতপুর উপজেলার মৃত জিয়াউল হকের ছেলে তিনি। দৌলতপুর ছাড়াও ভেড়ামারার বিলশুকা ও কুষ্টিয়ার মজমপুরে তার বাড়ি রয়েছে। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলেন তাই অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
গত বৃহস্পতিবার (৯ই মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেবা নিতে আসা অধিকাংশ ব্যক্তি এর আগেও একাধিকবার এসেছেন। তহসিলদার শরিফুল ইসলাম সেদিনও তাদের নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন। সাংবাদিক দেখে কয়েকজনের কাজ করতে দেখা যায় এবং এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেন, আমি লিখতে পারি, লিখাতেও পারি।
স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, শরিফুলের টার্গেট অসহায় ও দরিদ্র কৃষক। তার নিকট কেউ কাজের জন্যে আসলে নানা অজুহাতে দিনের পর দিন ঘুরিয়ে বাড়িতে লোক দিয়ে কাজ করাবে বলে অতিরিক্ত টাকা নেয়। যা নেয় তার অর্ধেক রশীদ করে। ৩০০/- (তিনশত) টাকার কমে একটি পর্চাও মেলে না। সে এখানে প্রায় ৬ বছর ধরে কর্মরত আছেন। কিছু বললেই বলে উপরে লোক আছে, কিচ্ছুই করতে পারবেন না ।
ক্ষেমিরদিয়ার থেকে আসা মালেকা খাতুন জানান, গত তিনদিন থেকে ঘুরছি এখনো কাজের কোন নাম নেই।
ভুক্তভোগী সামিরুন বেগম জানান, ২০২৩ইং সালের ডিসেম্বরে কাজের জন্য টাকা দিয়েছি এখনো কাজ শেষ হয়নি।
বাহাদুরপুরের কৃষক জমিন মণ্ডল জানান, “আমি তহসিলদারকে (শরিফুল) জমি খারিজের জন্য ১০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছি। আর সে দাখিলা কেটেছে ৭ হাজার ৩০০ টাকার।বাদবাকি পকেটে রেখেছেন।”
ফার্নিচার ব্যবসায়ী আসাদুল জানান, “আমার ভূমি অফিসের পাশে বাড়ি হওয়ায় ৩০০/- (তিনশত) টাকা নেওয়ার শর্তে ৫ হাজার টাকার কাজ সে ১৬০০ টাকায় করে দিয়েছে।”
বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি থাকার কথা স্বীকার করে শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি কোন অনিয়ম-দুর্নীতি করি না। একটি ছেলে দিয়ে বাড়িতে কাজ করায়। তাকেও নিজে বেতন দেয়।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন জানান, শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়েছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ১১ মে ২০২৪

Discussion about this post