ভেড়ামারা প্রতিনিধি ।। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা অনলাইন প্রেসক্লাবের হলরুমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সমাজ কল্যাণ সংস্থা এবং ভেড়ামারা অনলাইন প্রেসক্লাব আয়োজিত সকালে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ শুরু উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে বিস্তারিত আলোচনা করেন দেশ-বিদেশ খ্যাত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ভেড়ামারা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি লায়ন ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা। তিনি জনস্বার্থে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের করোনীয় শীর্ষক আলোচনা করেন ও প্রচার প্রচারণা করার জন্য আহবান জানান এবং তার বক্তৃতায় বলেন, সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রতিবছর ১ থেকে ৭ আগস্ট দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।
এবারের বিশ্ব নিরাপদ মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২২-এর প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- ‘স্টেপ আপ ফর ব্রেস্ট ফিডিং: এডুকেট অ্যান্ড সাপোর্ট’।
প্রকৃতপক্ষে, উপযুক্ত শিক্ষা ও সহযোগিতার মাধ্যমেই শিশুর স্তন্যপানকে এগিয়ে নিতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে।
নবজাতকের জন্য মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই। শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে মাতৃদুগ্ধ পানের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মূলত এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতেই বিশ্বজুড়ে পালিত হয় মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ পান করালে শিশুমৃত্যুর হার ৩১ শতাংশ কমে। এ ছাড়া ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ পান করালে শিশুর মৃত্যুঝুঁকি হ্রাস পায় আরও ১৩ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, ‘প্রটেক্ট ব্রেস্টফিডিং, এ শেয়ারড রেসপনসিবিলিটি।’ মায়ের দুধ খাওয়ানোর সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করতে হবে। মায়ের দুধ খাওয়ানোকে জনস্বাস্থ্য সেবার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা এবং সর্বোচ্চ সফলতার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে হবে। সেইসাথে
গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের ভাতা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। মাতৃদুগ্ধদানের সুরক্ষা, প্রচার ও সমর্থনে সমাজের বিভিন্ন স্তরের সমন্বয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ; স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর কাউন্সেলিং ও মাতৃদুগ্ধ বিকল্প, শিশুখাদ্য আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায়ে মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশুখাদ্য আইনের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
আইবিএফএএনের তথ্য অনুযায়ী, শিশুকে মায়ের দুধ না খাওয়ালে নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৫ গুণ, ডায়রিয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১১ গুণ, শিশুদের অপুষ্টি ও অন্যান্য কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৪ গুণ এবং জন্ডিস, কানপাকা ও পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণসহ ডায়রিয়ার শঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়; বয়সের তুলনায় ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায়; দীর্ঘস্থায়ী রোগের (ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্থূলতা) ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
ফলে সচেতনতায় পারে শিশুর মৃত্যু হার কমাতে। মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সমাজ কল্যাণ সংস্থা এবং ভেড়ামারা অনলাইন প্রেসক্লাবের সকল সাংবাদিকদের এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার আহবান জানান।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//১ আগষ্ট-২০২২//