Print Date & Time : 3 May 2025 Saturday 10:42 pm

মইজ্জ্যারটেক পশুর হাট, দরদামেই আছেন ক্রেতারা

জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

২৯ জুন উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসেছে পশুর হাট। তবে এখনও জমে ওঠেনি কেনাবেচা। বিক্রেতারা আশা করছেন, দুয়েক দিনের মধ্যেই কেনাবেচা বাড়বে। দরদামেই আছেন ক্রেতারা।

মইজ্জ্যারটেক পশুর হাট, কলেজ বাজারর, ফকিরনিরহাট ও ফাজিলখাঁর হাটসহ কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, পশু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় আছেন বিক্রেতারা। হাটে ক্রেতারা আসছেন। পশুর দামদর করছেন। তবে কিনছেন খুবই কমসংখ্যক মানুষ।

এবারে মইজ্জ্যারটেক পশুর হাটে নজর কেড়েছে ‘কালা মানিক’। এই কালা মানিক কিন্তু ফুটবলার নয়, তবু কোরবানির পশুর হাট কাঁপাবে বলে ধারণা স্থানীয় খামারিদের। গরুটির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট, উচ্চতা ৫ ফুট, কালো আর সাদা রঙের সুঠাম প্রাণি। এটি বাজারের সবচেয়ে বড় গরু। জুলধার গরু ব্যবসায়ি এটির দাম হাকিয়েছেন ১০ লাখ। ১১৮০ কেজি ওজন হবে বলে ব্যবসায়ির ধারণা। প্রতিদিন ঘাস ও খড় একসাথে ও ফিড মিক্স করে খাওয়ানো হয় কালা মানিক কে। খাদ্য তালিকায় রয়েছে দৈনিক ২ কেজি কমলা ও আপেল।

জানা গেছে, ফকিরনিরহাট গরুর বাজার বসবে রবি ও বুধবার, কলেজ বাজার বসবে শনি ও মঙ্গল বার, ফাজিলখাঁর পশুর হাট বসবে সোম ও বৃহস্পতিবার, মইজ্জ্যারটেক গরু ছাগলের হাট বসবে সোম ও শুক্রবার।

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে দু’একটি অস্থায়ী পশুর হাটও রয়েছে। প্রশাসন কাগজে কলমে জানিয়েছেন মাত্র দুই দিন বসবে এসব পশুর হাট। কিন্তু ইজারাদারগণ মানতে নারাজ। কারণ অতীতে ১০ দিন করে সব বাজার বসেছে বলে তাদের দাবি। প্রশাসনও কাগজে কলমে ঠিক রেখে ম্যানেজ হয়ে রয়েছেন বলে অন্য বাজারের ইজারাদার মো. ওসমান জানান। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্রির জন্য কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। সবার পরিচিত গরু ব্যবসায়ি আকবরও মইজ্জ্যারটেকে গরু নিয়ে এসেছেন। যার গরু বাজারে প্রবেশ না করলে জমে না বলে ধারণা। এছাড়া এখনো পর্যায়ক্রমে পশু নিয়ে হাটে আসছেন তারা। এদিকে ঈদ ঘনিয়ে এলেও পুরোপুরি জমে ওঠেনি এখানকার হাটগুলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রধান সড়কের আখতারুজ্জামান চত্বর ক্রস করলেই চোখে পড়বে বড় করে টাঙানো আছে হাটের তোরণ। সেখানে লেখা আছে, ‘মইজ্জ্যারটেক গরু-ছাগলের হাট’। কিছু সময় পরপরই তোরণের নিচ দিয়ে হাটের উদ্দেশে ট্রাক ভর্তি গরু ঢুকছে। পাশেই হাটের প্রথম অংশ। সিডিএ আবাসিক মাঠেও হাটের বেশিরভাগ জায়গা এখনো ফাঁকা। লাগানো হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি। পশুগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখতে নিচু জায়গায় মাটি ভরাট করে বাঁধা হয়েছে বাঁশের খুঁটি।

মূলত হাট এলাকার প্রায় ৬০ শতাংশ অংশজুড়ে কোরবানির পশু নিয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এখনো তেমন ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন না তারা। তাদের মতে, গত বছরের তুলনায় এবার হাটে পশুর সংখ্যা কম মনে হয়েছে। হয়ত আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে হাট জমে উঠবে।

মইজ্জ্যারটেক হাটের মুখপাত্র জীবন মঞ্জু, সাজ্জাদ ও ইসমাইল বলেন, ‘পশু আসতে শুরু করেছে। ঈদের আগের তিন-চারদিন বিক্রি বেশি পরিমাণে হবে। এ বছর ১৫-২০টি স্থায়ী হাসিল কাউন্টার ও ৩-৪টি অস্থায়ী হাসিল কাউন্টার থাকবে। সব মিলিয়ে এ বছর প্রায় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। শতকরা ৫ টাকা হারে হাসিল সংগ্রহ করা হবে। হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের টিম জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা করবে।’

কর্ণফুলী থানার ওসি মো. দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প রাখা হবে। এছাড়া জাল নোট শনাক্ত করার মেশিন ও এটিএম বুথও থাকবে। পশুর হাট সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। এছাড়াও ৯৯৯ তো রয়েছে-ই।’