নৌকার ছাদে মিউজিকের তালে নাচানাচির সময় পল্লি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে তারা পানিতে পড়ে। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অরক্ষিত বিদ্যুতের কবলে পড়েছে মকশ বিলের নৌকা ভ্রমণকারীরা। এ সময় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে পানিতে ডুবে এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ ও ছয়জন আহত হন। এ ঘটনার একদিন পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এ ঘটনায় বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর ক্ষুব্দ নিহতের পরিবারসহ এলাকাবাসী। নিহত হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার মাঝুখান গ্রামের মঞ্জুরুল হোসেনের ছেলে সিয়াম হোসেন (২০)। তিনি স্থানীয় কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার মাঝুখান এলাকার মর্নিংসান প্রি ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুল থেকে শিক্ষক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে নৌকা ভ্রমণের আয়োজন করে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে তারা তুরাগ নদীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে নৌকা নিয়ে তারা উপজেলার মকশ বিলে যায়। ওই বিলে ঘুরাঘুরির এক পর্যায় নৌকার ছাদে থাকা শিক্ষার্থীরা মিউজিকের সঙ্গে নাচানাচি করার সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ে। এসময় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে জলসে যাওয়াসহ সবাই মকশ বিলের পানিতে পড়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন বিল থেকে তাদের থেকে উদ্ধার করে। কিন্তু শরীরের কিছু অংশ জলসে যাওয়া শিক্ষার্থী সিয়াম ওই বিলের পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন। পরে উদ্ধারকৃত আহতদের মধ্যে ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শাহিন মিয়া, অয়ন হোসেন, আমিনুল ইসলাম এবং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সেলিম হোসেন ও তার স্ত্রী ঝুমুর আক্তারকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের অনেকের শরীরের কিছু অংশ জলসে গেছে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে সিয়ামকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। এসময় তারা ব্যর্থ হয়ে গাজীপুরের টঙ্গীতে ডুবুরি দলকে খবর দেয় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে ডুবুরি দল চেষ্টা চালিয়ে নিখোঁজের একদিন পর গতকাল শুক্রবার দুপুরে সিয়ামের লাশ উদ্ধার করে। নিহতের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। এসময় ওই বিলে অরক্ষিত বিদ্যুৎ লাইন থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এলাকাবাসী। তারা ওই স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছেন উত্তেজিত লোকজন।
ওই স্কুলের পরিচালক সেলিম হোসেন জানান, স্কুলের শিক্ষার্থী এবং শিকক্ষদের নিয়ে নৌকা ভ্রমনের এক পর্যায় মকশ বিলে অরক্ষিত বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এব্যাপারে ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চন্দ্রা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী কামাল হোসেন মুঠোফোন ধরলেও ওই দুর্ঘটনা ও মকশ বিলের অরক্ষিত বিদ্যুৎ লাইনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাইরে আছি বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
কালিয়াকৈর দমকল বাহিনীর ষ্টেশন কর্মকর্তা ইফতেখার রায়হান জানান, টঙ্গী থেকে আসা একদল ডুবুরী দল নিখোঁজের একদিন পর ওই শিক্ষার্থী লাশ উদ্ধার করে। পরে নিহতের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/