Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 2:54 am

মণিরামপুরে বিরাট রাজার ঢিবিতে সহস্র বছরের নিদর্শন

নিজস্ব প্রতিনিধি (যশোর)
যশোরের সবচেয়ে বড় থানা মণিরামপুরের খেদাপাড়ার বিরাট রাজার ঢিবিকে ঘিরে রয়েছে কয়েক পুরুষের গল্প-কল্পনা।
স্থানীয়দের কয়েক পুরুষের দাবি, এই ঢিবিতেই হাজার বছরেরও বেশ সময় আগে ছিল, প্রতাপশালী বিরাট রাজার বাড়ি।

এখনও সেখানে গুপ্তধনের সন্ধান মিলতে পারে, এমন স্বপ্নে বিভোর স্থানীয় অনেকে। প্রকৃত ইতিহাসের খোঁজে সম্প্রতি এর খনন শুরু করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর। ধারণা করা হচ্ছে, পুরো খনন শেষে উদঘাটন হতে পারে জেলার গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস।

২০০৬ সালে মণিরামপুর উপজেলার দমদম পীরের ঢিবিতে খননকাজ করা হয়। তখন একটি অনুসন্ধানে উপজেলার খেদাপাড়ায় ধনপোতা ঢিবির সন্ধান পাওয়া যা। প্রথমে ছয় শ্রমিক একটি বর্গে খননকাজ শুরু করেন। এখন ১৭ শ্রমিক আটটি বর্গে খননকাজ করছেন। দেওয়ালে দুই ধরনের ইট পাওয়া গেছে। একটি ইটের দৈর্ঘ্য ৩২ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১৬ ও উচ্চতা ৫ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। অন্যটির দৈর্ঘ্য ৩৬ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ২২ ও উচ্চতা ৬ সেন্টিমিটার। দেওয়ালের গাঁথুনি কাদার। দেওয়ালে চুনের জমাটবাঁধা রয়েছে। এছাড়া খননে মৃৎপাত্র, পাথরের টুকরা, বাটি, পশুর হাড় ও পেরেক পাওয়া গেছে। চলতি মাসজুড়ে খননকাজ চলবে।

খননকৃত ঢিবিটির পাশেই রয়েছে আরেকটি ছোট ঢিবি। এলাকাবাসীদের ধারণা, বিরাট রাজা সেখানে বিচারিক কাজ সম্পাদন করতেন

একটি দেয়ালের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে দেখা মেলে আরেকটি দেয়ালের। গাঁথুনিতে ব্যবহার হয়েছে দুই ধরনের ইট। এছাড়া মৃৎপাত্র, পাথরের টুকরো, পশুর হাড় ও পেরেক পাওয়া গেছে। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে উৎসাহী লোকের ভিড় লেগে আছে এই নিদর্শন ঘিরে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর কর্মকর্তাদের মতে, পুরো খনন কাজ শেষ হলে জানা যাবে জেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। ঢিবিতে পাওয়া ইট ও গাথুনির সাথে কেশবপুরের ভরত রাজার দেউল, দোনার এলাকার দমদম পীরের ঢিবির ইট ও গাথুনির মিল রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা, এটি ১২শ’ বছর আগের কোনো স্থাপনা।

খুলনার প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন বলেন, খনন এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাই কিছু বলা সময় আসেনি। তবে, আশা করা হচ্ছে, খননে প্রাপ্ত ফলাফল যশোরের আদি ইতিহাস পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//