স্টাফ রিপোর্টার :
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের অনির্বাচিত কমিটির দুই জন সাবেক সাধারন সম্পাদকের সদস্য পদ বাতিল করেছে।সদস্য পদ বাতিলের পত্র পাওয়া দুইজনের মধ্যে একজন হচ্ছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক (দৈনিক ইত্তেফাকের ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ও চ্যানেল আইয়ের স্টাফ রিপোর্টার) শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ এবং দৈনিক জনকন্ঠের স্টাফ রিপোর্টার বাবুল হোসেন।
শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ দুই বার ও বাবুল হোসেন চার বার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের অনির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের গত ১২/০৬/২৫ তারিখে স্বাক্ষরিত প্রেসক্লাব সদস্য পদ বাতিলের এই পত্রটি শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ ও বাবুল হোসেন হাতে পান গত ১৫/০৬/২৫ তারিখ।
দৈনিক জনকন্ঠে‘ নির্বাচন ও ভোট ছাড়াই কমিটির দায়িত্বভার গ্রহন’ ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ‘ভোট ছাড়াই দায়িত্ব নিল ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করায় এই দুই সাবেক সাধারণ সম্পাদকের বিরদ্ধে গঠনতন্ত্রের ৯ ধারা মোতাবেক সদস্য পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় প্রেসক্লাবের অনির্বাচিত কমিটির কর্মকর্তারা।
প্রকাশিত সংবাদের কোন প্রতিবাদ তারা দেয়নি। ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের ৯ এর গ ধারায় বলা হয়েছে কোন সদস্য ‘ক্লাব নিয়মাবলী লঙ্গন বা অশালীন আচরণে জন্য নির্বাহী পরিষদ কর্তৃক পদচ্যুত হলে’ তার সদস্যপদ বাতিল হবে।
ক্লাব নিয়মাবলীর কোথাও প্রেসক্লাব নিয়ে কোন সত্য সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না এমন কথা উল্লেখ নেই গঠনতন্ত্রে। কার সাথে অসদাচরণ করা হয়েছে সেটিও সদস্যপদ বাতিলের পত্রে উল্লেখ নেই। নির্বাচন ছাড়াই প্রেসক্লাবের ক্ষমতা দখলকারী নাকি এ নিয়ে সত্য প্রকাশকারী কারনে প্রেসক্লাবের নিয়মাবলী লঙ্গন বা অশালীন আচরণ হয়েছে? প্রশ্ন সাংবাদিক সমাজসহ সচেতন ময়মনসিংহবাসীর। অনির্বাচিত কমিটির এমন তুঘলকি কান্ডে হতবাক ও ক্ষুব্ধ ময়মনসিংহের পেশাদার সাংবাদিক সমাজ ও সুশীল সমাজসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ।
সদস্যপদ বাতিলের পত্রে বলা হয়, গত ২৪ মে, ২০২৫ তারিখ অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের অনির্বাচিত কমিটির ৬ষ্ঠ সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সভায় বিএনপির সাবেক নেতা ও অনির্বাচিত কমিটির সহ সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের পদাধিকার বলে সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমসহ কমিটি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চলতি সালের গত ৫ জানুয়ারি ‘জুলাই আগষ্ট চেতনার বিপ্লবী কমিটি’র কথা বলে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঘাদানিক নেতা ও জাতীয় পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদকসহ পতিত সরকারের বেশিরভাগ দোসরদের নিয়ে নির্বাচন ছাড়াই কমিটি গঠন করা হয়।
অনির্বাচিত এই কমিটির বৈধতা নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন দাখিল করেন ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব ও জিয়া পরিষদের সদস্য এম এ মোতালেব। ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব নির্বাচনে বাবুল হোসেন ও শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ রীটের বাদী এমএ মোতালেবের প্যানেলভুক্ত ছিলেন। মহামান্য হাইকোর্ট গত ৯ মার্চ, ২০২৫ তারিখ এক রুল নিশিতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের এই অনির্বাচিত কমিটিকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন নতুন করে নির্বাচনের আদেশ দেয়া হবে মর্মে কারণ দর্শাতে বলেন।
আগামী ২২ জুন হাইকোর্টে এই রুলের ওপর শুনানীর দিন ধার্য রয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের রুল নিশি জারির পর অনির্বাচিত কমিটির এমন তুঘলকি কান্ড নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের ইতিহাসে নির্বাচন ছাড়াই চরদখলের মত অনির্বাচিত কমিটির দায়িত্বভার গ্রহন নিয়ে প্রেসক্লাবের মর্যাদা ও সুনাম ক্ষুন্ন হলেও এখন উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে নিজেদের ফ্যাসিবাদী চরিত্র প্রকাশ করেছেন বলে মনে করছেন সাংবাদিকদের অনেকেই।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//

Discussion about this post