চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: কড়া নাড়ছে মাহে রমজান। এরই মধ্যে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। তা নিয়েই যত চিন্তা দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের। শুক্রবার চট্টগ্রাম শহরের রেয়াজুদ্দিন বাজার ও বিভিন্ন পাঁচলাইশে গ্রান্ড ওপেনিং উৎসব সুপারশপ ঘুরে দেখা গেছে-আগে থেকে বাড়তি চিনি, তেল, আটা-ময়দার দাম কমেনি। রোজায় ইফতারি তৈরিতে সাধারণত ছোলা, ডাল, বেসনের বেশি ব্যবহার হয়।
এসব পণ্যের দাম হু হু করে বেড়েছে। এমনকি শরবত তৈরির জন্য যে ট্যাং লাগে তা কেজিপ্রতি প্রায় ২০০ টাকা বাড়তি দামে। বর্তমান বাজারে ট্যাং ১৪০০-১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ছোলার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাসখানেক আগে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা দরে, যা এখন ৯৫-১০০ টাকা। প্রতিটি পণ্যে ওপেনিং উপলক্ষ্যে ভ্যাট ব্যতিত লোগো লাগালেও ক্যাশে কৌশলে ভ্যাট নিতে গেছে। যা গ্রাহকের সাথে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
ছোলার সঙ্গে ছোলাবুটের দামও বেড়েছে ৫-১০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি ছোলাবুট বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। এছাড়া অ্যাংকর ডাল কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ৭০-৮০ টাকা এবং একইভাবে বেসনের দাম বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেঁধে দেয়া দামে প্রতি লিটার খোলা পাম তেল ১১৭ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা।
একইভাবে সরকার নির্ধারিত প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকার পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছে ১৭২ থেকে ১৭৫ টাকায়। খোলা চিনির ক্ষেত্রে নির্ধারিত দাম ১০৭ টাকা হলেও এখনো খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল চিনি (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা দামে। এদিকে মসলার বাজারে আদা-রসুনের বাড়তি দাম কমেনি। আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে মাছ-মাংস এখন অনেকটাই স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। মুরগির বাজার এক-দেড় মাস ধরেই অস্থির। দফায় দফায় বেড়ে ব্রয়লারের কেজি এখন ২৫০-২৫৫ টাকা। সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩৪০-৩৫০ টাকা। মাসের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম প্রায় ৫০ টাকা বেড়ে এখন প্রতি কেজি ৭৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে মানভেদে রুই-কাতলার কেজি হয়েছে ৩৫০-৪০০ টাকা। চাষের তেলাপিয়া পাঙাশও ২০০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। বেড়ে গেছে লেবুর দাম। এক হালি লেবু আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত। একই কারণে বাড়ছে বেগুনের দামও। গোল বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে। তবে লম্বা বেগুন ৫০-৭০ টাকা, যা সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ২০ টাকা বেড়েছে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী (অফিস প্রধান) জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে দুই ধাপে রোজার পণ্য বিক্রি হবে। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতিও শেষ করা হয়েছে। কিন্তু কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পণ্যের দাম এখন অনেক বেড়েছে। তাই সাধারণ মানুষের এখন পণ্য কিনতে কষ্ট হচ্ছে।
সাধারণ মানুষেরা বলছেন, রমজানে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোরভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণে আলাদা ট্রান্সফোর্স গঠন করা।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//