রুম্মান দেওয়ান, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়নগঞ্জ) প্রতিনিধি ।। আদমজী ইপিজেডের ভিতরে একটি গার্মেন্টস কারখানায় নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ নিয়ে বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ইপিজেড ও সুমিলপাড়া এলাকায় তিন দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত ইকবালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্যদের নারায়ণগঞ্জ খানপুর এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আদমজী ইপিজেডের ঠিকাদার হিরা জানায়, চার্মিন নামে একটি নির্মাণাধীন কারখানায় ইট, বালু সরবরাহ, রং ও টাইলস বসানোর কাজ পেয়েছি। কাজ প্রায় শেষের পথে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক লিটন ওরফে গুজা লিটন কাজটি জোর করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুপুর আড়াইটার দিকে গুজা লিটন, ডজনের অধিক মামলার আসামি সেলিম মজুমদার ও যুবলীগ নেতা খোকন মল্লিক হত্যাকা-ের মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী সোহেলের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন লোক ইপিজেডের ভেতরে চার্মিন গার্মেন্টসে গিয়ে আমার ম্যানেজার ইকবালকে টেনে হেঁচড়ে কুপিয়ে মারধর করে। তাকে রক্ষা করতে গেলে ইব্রাহীম ও শামীমকেও মরধর করা হয়। পরে তারা সুমিলপাড়া গিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি আক্তার হোসেনের অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে।
আক্তার হোসেন বলেন, হিরার সঙ্গে আমিও ইপিজেডে যৌথভাবে কাজ করি। একারণে আমার অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। আহত ইকবালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আর ইব্রাহীম ও শামীমকে জেলা শহরের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক লিটন ওরফে গুজা লিটন বলেন, চার্মিন গার্মেন্টসের নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ আমি পেয়েছিলাম। হীরার সঙ্গে মিলে আক্তার জোর করে নিয়ে নেয়। আমি প্রতিবাদ করায় বেলা তিনটার দিকে কদমতলী এলাকার নামধারী যুবলীগ নেতা জীবন ও আক্তারের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক নারায়ণগঞ্জ মহানগর তাঁতী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে মারধর ও ভাংচুর করে। এ হামলায় আমিসহ, আলাউদ্দিন, আবুল, হৃদয় আহত হই। তাদের নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গুজা লিটন এলাকায় বিশাল মাদক ব্যবসায়ী চক্র গড়ে তুলেছে। দলীয় ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন অবৈধ আয়ের উৎস নিয়ন্ত্রণ করছে লিটন। এখন তিনি নজর দিয়েছেন আদমজী ইপিজেডে। নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় বিভিন্ন কারখানা। নির্মাণাধীন চার্মিন গার্মেন্টসটির কাজও নিয়ন্ত্রণ নিতে বেশ কিছু দিন ধরে লিটন ও সন্ত্রাসী সেলিম মজুমদার জোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে দলীয় ও বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে ঠিকাদার হিরার ম্যানেজার ইকবালকে মারধর করে কাজ না করার কথা বলে। শুধু ইপিজেডই নয় আরো বিভিন্ন উৎস নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাঁয়তারা করছে লিটন ও সেলিম মজুমদার।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শওকত জামিল জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। তবে পুলিশ আসার আগেই তারা চলে যায়। এসে কোন সংঘর্ষ পাইনি। তবে দুইটি অফিস ভাংচুর দেখতে পেয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে দুই অফিস এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি)মশিউর রহমান জানান, চার্মিন ফ্যাক্টরির নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। এখন কে এই ফ্যাক্টরির ব্যবসা দখল করবে এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। এঘটনায় কোন পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৫ আগষ্ট-২০২২

Discussion about this post