মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :মৌলভীবাজার শহরের কাজিরগাঁও এলাকায় আমেরিকা প্রবাসী আফিয়া বেগমের বাসা দখলের চেষ্টা ও স্থানীদের হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন করে ভুক্তভুগিরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৪ আগষ্ট দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে কাজিরগাঁও এলাকাবাসীর পক্ষে অয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে দলবল নিয়ে হামলা চালান মৌলভীবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক আহমদ। এ সময় তার স্ত্রী ও সন্তান সাথে ছিল। মানববন্ধনকারীরা সুষ্টু বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
মানববন্ধনকারীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসী আফিয়া বেগমের বাসা দখল রেখে তার কেয়ারটেকারসহ এলাকার নিরহ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রিপন মিয়া, আমিনুর রশিদ, জুয়েল, বাসার ভাড়াটিয়া শাহানা, ফাতেমা আক্তার, কমলা বেগম, বাসার কেয়ারটেকার মোঃ হেলাল সহ অন্যান্যরা। পরে তারা জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রতিকার চেয়ে স্বারক লিপি প্রদান করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক আহমদের অত্যাচারে অতীষ্ট হয়ে আমরা সাধারণ মানুষ তার জন্য নিরাপদে বসবাস ও চলাচল করতে পারছিনা না। প্রতিনিয়ত মামলা হামলার হুমকি দেখান। এমনকি আমাদের অনেককে জেলেও খাটিয়েছেন।
প্রবাসী আফিয়া বেগমের বাসার কেয়ারটেকার মোঃ হেলাল বলেন, ফারুক আহমেদ আমাদেরকে ব্যবসা বাণিজ্য করতে দিচ্ছে না, আমাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মামলা ও হামলার হুমকি দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন যদি তোমরা আমার বিরুদ্ধে কিছু করো তাইলে আমি পুলিশ, র্যাব নিয়ে তোমাদেরকে গুম করে দিব।
অপর ভুক্তভোগী কাজিরগাঁওয়ের বাসিন্দা জুয়েল আহমদ বলেন, তিনি আমার দোকানে এসে আমাকে গুম করার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তিনি আমার হাটুতে আঘাত করে মারাত্মক জখম করেন।
মানববন্ধন চলাকালে এক পর্যায়ে ফারুক আহমেদ হাতে মরিচ ও এসিড মিশ্রিত বোতল নিয়ে মানববন্ধন প্রতিহত করতে আসলে মানববন্ধনকারীরা তার উপর ক্ষিপ্ত হন। এতে পুলিশ প্রশাসন তাকে নিরাপত্তা দিয়ে সরিয়ে দেন।
অভিযুক্ত, সাবেক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বর্তমানে ঢাকা সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত ফারুক আহমেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার ভাড়া পরিশোধ রয়েছে। লন্ডন প্রবাসী আফিয়া বেগমের স্বামী হারুন মিয়া তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বাসা বের হওয়ার জন্য হুমকি দেন। এ বিষয়ে তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন, ওই মামলা বর্তমানে চলমান রয়েছে। আদালতে যেহেতু মামলা চলমান রয়েছে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাসা ত্যাগ করবো। তার হাতে থাকা মরিচ ও এসিড মিশ্রিত বোতলের বিষয়ে জানতে চাইলে ফারুক আহমদ বলেন, আমার হাতে এসিড থাকার প্রশ্নই আসে না। আমার হাতের বোতলে শরবত ছিল। আমি একজন ডায়বেটিক ও হার্টের রোগী, তাই আমি সবসময় শরবত সাথে রাখি। মানববন্ধনে হামলার অভিযোগ রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমতি না নিয়ে মানবন্ধন করায় তিনি জেলা প্রশাসক, পুলিশকে জানান।
এবিষয়ে তারা কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় একজন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালনে মানববন্ধনস্থলে যাই ও পুলিশকে অনুরোধ করি যাতে এখানে কেউ মানবন্ধন না করে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, ঘটনা শুনেছে অত্যন্ত দু:খ জনক, আমরা এ বিষয়ে বিব্রত আছি। ফারুক আহমদ এই জেলার অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট ছিলেন, উনার বিরুদ্ধে একটি বিভাগীর মামলা চলছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//