নিজস্ব প্রতিবেদক: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড়বাজারের পার্শ্ববর্তী সৈয়দ মাসুদ রুমি কলেজ ও গড়াই নদীর বেড়ীবাদ সংলগ্ন বাহাদুরখালী মৌজার ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি জমিতে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ জমি সরকারী ডিসিআর গ্রহীতার কাছ থেকে প্রবাস জীবনের শেষ সম্বল জমানো অর্থের বিনিময়ে লেবানন প্রবাসী স্বামী পরিত্যক্তা লাকী খাতুন মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজতে মায়ের মাধ্যমে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে কেনে এক খন্ড জমি।
দীর্ঘ আঠারো বছর বসবাস করার পর হঠাৎ শুনতে পান তার ছেলে শাকিল মন্ডল বড়বাজার ছালাপট্টির আনোয়ার হোসেন বাবুর নিকট বিক্রি করেছে তার শেষ আশ্রয়স্থল টুকু।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ বিষয়টি শোনা মাত্র তিনি ছালাপট্টির বাবুকে কিনতে নিষেধ করার পাশাপাশি আশ্রয়ন প্রকল্পের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে অভিযোগ নিয়ে ঘুরতে থাকে এই হতভাগা নারী।
বিষয়টি নিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পে সালিশি বৈঠকে তাকে জানানো হয় ছেলে শাকিলের নামে লাকি খাতুন ৩শত টাকার স্ট্যাম্পে দানপত্রের বলে শাকিল বড়বাজার ছালা পট্টির আনোয়ার হোসেন বাবুর ছেলে মেহেদী হাসানের নামে জমি বিক্রয় নামা স্ট্যাম্পে সাড়ে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে।
এ সময় ভুক্তভোগী নারী লাখী খাতুন ছেলের নামে কোন দানপত্র স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেননি বলে জানালেও কোন যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রায় দের যুগের বসবাসের শেষ আবাসস্থলটুকু থেকে তাকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় এই সালিশে বৈঠক।
এই বিষয়ে তিনি রাব ক্যাম্প ও আর্মি একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, লাখী খাতুন বাদী হয়ে শাকিল মন্ডল (২৪), মতিয়ার (৪০), বিনা, বাবু (০) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
করেন যে, এবং বলেন উক্ত বিবাদীগণ আমার তার সম্পত্তি এবং বাড়িঘর জোরপূর্বক দখল করিবে বলিয়া তাকে দীর্ঘদিন যাবত
অত্যাচার করিয়া আসিতেছিল।
এমনকি বিবাদীগণ তাকে বিভিন্ন সময় এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করিয়া বাড়ি থেকে বাহির করিয়া দেয়।
পরবর্তীতে তিনি তার মায়ের বাড়িতে গিয়ে দীন যাপন করেন। এরই সুযোগ নিয়ে বিবাদীগণ তার অজান্তে গোপনে তার সম্পত্তি, মোঃ আলা (৫০), পিতাঃ অজ্ঞাত নামা, সাং- বিশ্বাসপাড়া, থানা ও জেলাঃ কুষ্টিয়া এর নিকট বিক্রয় করিয়া দিয়াছে। এমনকি মোঃ আলা (৫০), তাকে এবং তার পরিবারে লোকজনদের তার নিজ বাড়ি থেকে বাহির করিয়া দিয়াছে। বিষয়টি বিবেচনা করিয়া সকল প্রকার আইনি সহায়তা একান্ত ভাবে কামনা করেন।
উচ্ছেদ প্রসঙ্গে কান্না জড়িত কন্ঠে ভুক্তভোগী নারী লাকী খাতুন জানান, আমার বাবা নেই, স্বামী নেই এক সন্তান আলাদা থাকলেও আরো দুইটি সন্তান নিয়ে কোনরকমে মাথা গোজার শেষ আশ্রয়স্থলটুকুতে বসবাস করে আসছি। প্রবাস জীবনের জমানো শেষ অর্থটুকু দিয়ে কেনা জমিতে বসবাস করছি। আমার স্বাক্ষর জাল করে আমার ছেলে শাকিল মন্ডল তার বাবার যোগসাজশে টাকার লোভে জমিটি অন্যের কাছে বিক্রি করেছে । আমি ক্রেতাদের অনেকবার নিষেধ করার সত্ত্বেও তারা আমার কথা শুনেনি জোর করে আমার ভিটে থেকে আমাকে উচ্ছেদ করেছে। আমি এখন আমার দুই সন্তান নিয়ে কোথায় যাবো। অভিযোগ নিয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানাসহ ডিসি অফিস- ইউএনও অফিস সব জায়গায় গিয়েছি আমার এই বিচারের জন্য। কে করে দেবে আমার এই বিচার।

Discussion about this post