মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেল ও রাবার বুলেটে অন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুল ছাত্র হিমেলকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমানের নির্দেশে টাঙ্গাইল জেলা ও মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে গতকাল শুক্রবার হিমেল ও তার পরিবারের হাতে এ সহায়তা তুলে দেন।
এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি মো. হানোজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক এড. ফরহাদ ইকবাল, মির্জাপুর থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. আব্দুর রউফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার সালাউদ্দিন আরিফ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ শাহআলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডিএম শফিকুল ইসলাম ফরিদ, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএম মহসীন, টাঙ্গাইল জেরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ভৈষম্যবিরোধী সমন্ময়ক আল আমীন, আল আমীন সিয়াম, আব্দুল আলীম, শেখ ফরাশ ও রাকিন প্রমুখ। গত ২৭ দিন ধরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অতি দরিত্র পরিবারের সন্তান হিমেলের অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না বলে তার পরিবার জানিয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার অভাবে হিমেল এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের গোড়াই লালবাড়ি গ্রামে হিমেলের বাড়ি।
জানা গেছে, হিমেলের পিতার নাম আফাজ উদ্দিন এবং মাতার নাম নাছিমা বেগম ওরফে হাওয়া বেগম। বাবা দিনমজুর আফাজ উদ্দিন তার মাকে ছেড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছে। মা হাওয়া বেগম অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে। দুই ভাইয়ের মধ্যে হিশেল ছোট। হিমেল গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। রিকসা ও ভ্যান চালিয়ে পড়াশোনা করতো। এ বছর তার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার সব আশা শেষ করে দিয়েছে।
গত ৪ আগস্ট কোটা সংস্কার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিছিলের মাখথানে পরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গোড়াই সোহাগপাড়া এলাকায় পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেল ও রাবার বুলেটে হিমেলের শরীর ও চোখ মুখ ঝাঝড়া হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার দুটি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকা শেরে বাংলানগর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসকগন জানিয়েছেন রাবার বুলেট ও টিয়ার সেলের আঘাতে তার দুটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া শরীরেও রয়েছে ছড়ড়া গুলি। তাকে বাঁচাতে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হবে। এতে প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের পক্ষে এই টাকা যোগার করা কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না বলে সহপাঠীরা জানিয়েছে। তাকে বাঁচানোর জন্য তার সহপাঠী ও এরাকাবাসি অন্তবর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. জোবায়ের হোসেন ও গোড়াই লালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. শহিদ মিয়া বলেন, স্কুল ছাত্র হিমেলকে দেখতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী ঢাকা শেরে বাংলানগর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট হাসপাতালে গিয়েছিলেন। হিমেলকে সার্বিক সহযোগিতাসহ চিকিৎসকদের জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি মো. হানোজ্জামিল শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক এড. ফরহাদ ইকবাল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে প্রাথমিক ভাবে হিমেলকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তার পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা আশ্বাস দিয়েছেন তারেক রহমান।

Discussion about this post