টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পাহাড়ি অঞ্চলের হাট বাজারে স্থানীয় জাতের উৎপাদিত উন্নত জাতের শুসাধু কাঁঠাল বিক্রির ধুম পরেছে। ভাল দাম পেয়ে এলাকার কাঁঠাল চাষী ও কৃষরা খুশি।
বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকার ও ক্রেতারা মির্জাপুর উপজেলার হাট বাজারে কাঁঠাল নিয়ে যাচ্ছেন। সরকারী ও ব্যক্তি উদ্যোগে কাঁঠাল সংগ্রহের জন্য কোন হিমাগার গড়ে না উঠায় সংরক্ষনের অভাবে প্রতি বছর হাজার হাজার টন কাঁঠাল পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে কৃষকরা জানেিয়ছেন। ফলে এলাকার প্রান্তীক কাঁঠাল চাষীরা বেশ ক্ষতির মুৃখে পরেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) মির্জাপুর উপজেলার হাটুভাঙ্গা, বাঁশতৈল ও তক্তারচালা বাজারের বৃহৎ কাঁঠালের হাটে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কাঁঠাল চাষী ও কৃষকরা কাঁঠাল বিক্রীর জন্য ভ্যান, রিকসা মহিষের গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি ও ঠেলাগাড়ি নিয়ে শতশত কাঁঠাল বিক্রির জন্য আসছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কাঁঠালের ভাল ফলন হয়েছে। উপজেলার গোড়াই, আজগানা, তরফপুর, লতিফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নে পাহাড়ি এলাকায় সর্বাধিক কাঁঠাল হয়েছে। কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, কাঁঠালের কোন অনুমোদিত জাত না থাকলেও কোষের বৈশিষ্ঠ্য অনুসারে স্থানীয় উন্নত জাত, খাঁজা, আদরসা ও গালা চার প্রকার প্রকার কাঁঠাল মির্জাপুর উপজেলায় চাষ হয়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক এবং কাঁঠাল সংগ্রহের জন্য কোন হিমাগার গড়ে না ওঠায় প্রতি বছর হাজার হাজার টন কাঁঠাল পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে মির্জাপুরে বিভিন্ন এলাকায় কাঁঠাল চাষীরা উৎপাদিত কাঁঠালের দাম না পেয়ে বিপাকে পরেছেন।
বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর গ্রামের কাঁটার চাষী লিয়াকত মিয় (৫০), তালতলা গ্রামের ময়েজ উদ্দিন (৫৬)সহ অনেকেই জানান, বড় সাইজের কাঁঠল ৯০-১২০ টাকা, মাঝারি সাইজের কাঁঠাল ৪০-৬০ টাকা এবং ছোট সাইজের কাঁঠার ২০-৪০ টাকায় বিক্রী হচেছ। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারগন এসে কাঁটাল নিয়ে যাচ্ছে। এ বছর কাঁটালের দাম বেশ ভাল বলে তারা জানিয়েছেন। কৃষি মন্ত্রনালয়, শিল্প মালিকসহ ব্যক্তি উগ্যোগে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নে কাঁঠাল সংগ্রহের জন্য হিমাগার গড়ে তোলা হলে সরকারও রাজস্ব পাবে তেমনি এলাকার কৃষকরাও উৎপাদিত কাঁঠালের ভাল দাম পাবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। এই কাঁঠাল টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ জেলায় দেশের সর্বাধিক কাঁঠাল উৎপন্ন হয়। কাঁঠালের মধ্যে নানা গুনাগুণ রয়েছে। এতে প্রচুর শর্করা, আমিষ ও ভিটামিন এ রয়েছে। কাঁচা ফল তরকারী, পাকলে ফল হিসেবে এবং বীজ ময়দা ও তরকারি হিসেবে এবং বীজ পুড়িয়েও খাওয়া যায়। কাঁঠালের শাঁস ও বীজকে চীন দেশে বলবর্ধক হিসেবে ব্যবহার হয়। শিকড়ের রস জ্বর এবং পাতলা পায়খানা নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।
এব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাগন কাঁঠাল চাষে উৎসাহিত করার জন্য এলাকার কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন। চলতি মৌসুমে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারগন এসে বিভিন্ন হাট বাজার থেকে কাঁঠাল নিয়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষকরা ভাল দাম পাচ্ছেন। আগামীতে কাঁটালের আবাদ ডাতে আরও ভাল হয় সে জন্য কৃষি বিভাগ থেকে এলাকার কাঁটাল চাষী এবং কৃষকদের সার্বিক ভাবে সহযোগিতা দেওয়া হবে।
আর//দৈনিক দেশতত্য//২৩ জুন-২০২২//

Discussion about this post