মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর(টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পাহাড়ি অঞ্চলে আইপিএম মডেল পরিবেশ বান্ধব উপায়ে নিরাপদ ফসল উৎপাদন শুরু হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে ইউনিয়নের পাঁচশত কৃষক এই কার্যক্রমের আওতায় নিরাপদ ফসল উৎপাদন করছে। বিশটি গ্রুপে প্রত্যেক গ্রুপে ২৫ জন কৃষক রয়েছে। প্রত্যেক কৃষকের বিশ শতক করে জমিতে চাষাবাদ করেছে। প্রায় ১০০ একর জমির মধ্যে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব কৌশলে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাউ, টমেটো, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, সিম, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা,শালগম, টমেটো চাষ করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) মির্জাপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সবজি উঃপাদনে ব্যাপক সারা।
মির্জাপুর উপজেলা কৃষি অফসের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাগন জানান, পরবর্তী খরিব মৌসুমী এসব জমিতে বেগুন, চাল কুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা জাতীয় সবজি উৎপাদন করবে বলে পরিকল্পনা গ্রহণ করা করেছে উপজেলা কৃষি অফিস এর পক্ষ থেকে। সার্বক্ষণিক ভাবে কৃষকদের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে নতুন নতুন প্রযুক্তি শেখানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রতিমাসে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার না করে কৃষকগণ ফসলের রোগ ও পোকা দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বিভিন্ন ধরনের আঠালো ফাঁদ ও জৈব বালাই নাশক ব্যবহার করছেন। ফলে উৎপাদিত হচ্ছে নিরাপদ ও বিষমুক্ত ফসল। অপর দিকে উপজেলার পৌরসভা, লতিফপুর, আজগানা, তরফপুর, গোড়াই, বহুরিয়া, ভাওড়া, ফতেপুর, জামুর্কি, বানাইল, ওয়ার্শি এবং আনাইতারা ইউনিয়নেও নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন হচ্ছে।
বাঁশতৈল ইউনিয়নের হলিদ্রাচালা ও বংশীনগর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, মির্জাপুর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাদের বিভিন্ন রকম সহযোগিতা করেছেন যেন নিরাপদ ফসল উৎপাদন করতে পারি। রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব সার দিয়ে স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে সবজি উৎপাদন করাকে তাঁরা সাধুবাদ জানিয়েছে। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। তারা আরো বলেন রাসায়নিক সার মানে বিষ, জৈব সার দিয়ে ভালো ফসল উৎপাদন করা যায় এবং এটি স্বাস্থ্য সম্মত। প্রত্যেক এলাকায় এই কার্যক্রম যেন চালানো হয় এ জন্য তারা জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, বাঁশতৈল ইউনিয়নে কৃষকদের গ্রুপ গঠন করে তাদের পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক কৃষককে সবজি বীজ চারা জৈব সার মালচিং সিট সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বিভিন্ন ধরনের আঠালো ফাঁদসহ অন্যান্য উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে কৃষকদের উৎপাদিত এসব নিরাপদ ফসল বাজারজাত করার জন্য ভ্যান এবং উন্নত পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের জন্য কৃষকদেরকে প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে নেট হাউস নির্মাণ করে দেওয়া পরিকল্পনা রয়েছে। আইপিএম মডেল ইউনিয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post