Print Date & Time : 10 May 2025 Saturday 3:00 pm

মির্জাপুরে ডাকাত ছিনতাইকারীসহ দুই শতাধিক গ্রেফতার

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অপরাধ দমনে চলছে পুলিশের সাড়াশি অভিযান। আন্তজেলা ডাকাত, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী ও পলাতক আসামীসহ দুই শতাধিক অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিট পুলিশিং সফল করি, সুখী নিরাপদ সমাজ গড়ি- এই শ্লোগান নিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা এবং অপরাধ দমন ও জনগনের আস্থা অর্জনে ওসির নিরলস প্রচেষ্টায় পুলিশ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।

ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি বলেছেন, অপরাধীদের কোন অবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে না। মাদেকর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করা হয়েছে।

রবিবার (৮ আগস্ট) মির্জাপুর থানা সুত্র জানায়, গত ১ মে থেকে আজ ৭ আগস্ট পর্যন্ত দেশীয় অস্ত্র সহ আন্তজেলা ৩০ জন ডাকাত মোটরসাইকেল চোর চক্রের ১০ জন চোরেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে মোটরসাইকেল চোরাই, মালামাল ও মাদক । এছাড়া খুন, মাদক, দস্যুতা, চুরি, বিভিন্ন মামলায় পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার হয়েছে।

মির্জাপুর থানার পুলিশ সদস্যগন পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট, বাসাবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত স্টিকার লাগাচ্ছেন। এছাড়া মির্জাপুর থানার ফটকে লালানো হয়েছে অফিসার ইনচার্জের নির্দেশনা স্টিকার। তাতে লেখা রয়েছে থানায় জিডি, অভিযোগ, মামালা রুজু, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, চাকুরীর ভেরিফিকেশনসহ যে কোন কাজে কোন টাকা লাগেনা। পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তার মোডে মোডে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।

এ বিষয়ে কয়েকজন সেবা গ্রহনকারী জানান, থানায় পুলিশের সেবা কার্যক্রম অনেক বদলে গেছে। প্রতিটি কাজে ডিচিটাল করায় ভোগান্তি অনেক কমে গেছে। বিভিন্ন কাজে পুলিশ আন্তরিকতার সঙ্গে সঠিক পরামর্শ দিচ্ছেন।

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেগ মাসুদ করিম বলেন, গত কয়েক মাসের ব্যবধানে দুই শতাধিক অপরাধী গ্রেফতার হয়েছে। মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে ১৭ টি বিট বিট পুলিশিং সেবা কেন্দ্রে (অফিসে) মির্জাপুর থানার একজন এসআই, একজন এএসআই, দুই জন কন্সটেবল এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ নিজ নিজ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগন সেবা কেন্দ্র পরিচালনা করবেন। এই কমিটি নিয়মিত কেন্দ্রে বসে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি গ্রামের সাধারন জনগনের যে কোন সমস্যার সমাধান করবেন।

বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নের অপরাধ প্রবনতা, মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মারামারী, বাল্য বিবাহ, নারী নির্যাতনসহ সাধারন ঘটনা নিয়ে মামলা মোকদ্দমা কমে গেছে। ফলে জনগনের ভোগান্তি যেমন কমছে, তেমনি তারা আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছেন না। বিট পুলিশিং এই সেবা কার্যক্রম এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে পুলিশের প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

এ ব্যাপারে ভাদগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজাহারুল ইসলাম আজাহার এবং জামুর্কি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডি এ মতিন বলেন, অপরাধ দমনে পুলিশ সাড়াশি অভিযানে নেমেছেন। বিট পুলিশিং সেবা কার্যক্রম চালু হওয়ার পর এলাকায় অপরাধ প্রবনতা অনেক কমে গেছে। এটা পুলিশ বাহিনী এবং সরকারের একটি মহতী উদ্যোগ।

মির্জাপুর-নাগরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এস এম আবু মনসুর মুসা বলেন, পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ এই শ্লোগান বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। পুলিশ এখন আর সেই আগের অবস্থানে নেই। বর্তমান সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টায় পুলিশ বাহিনীর আমুল পরিবর্তন হচ্ছে। জনগন সব সময় পুলিশের সেবা পেয়ে আসছে। বিট পুলিশিং সেবা কার্যক্রম তাদের মধ্যে অন্যতম।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান এবং এসিল্যান্ড মো. আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, থানা পুলিশসহ সুশিল সমাজের সহযোগিতায় মির্জাপুর উপজেলাকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করা হচ্ছে। অপরাধ দমনে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করে বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অপরাধীদের সাজা দেওয়া হচ্ছে।

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ০৭,২০২২//