আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা :সুদের টাকার জন্য এক তরুণী নির্মম ভাবে খুন হয়েছে। নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজের দুই দিন পর গজারি বনের ভিতর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় আজ বুধবার (৬ এপ্রিল) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তরুণী খুনের পর এলাকায় আতংক দেখা দিয়েছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর (চান্দের চালা) গ্রামে চাঞ্চল্যকর ও অমানবিক এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। মেয়েকে হারিয়ে বৃদ্ধ মা সাবজান বেগম (৭০) ও তার চার বোন এখন বাকরুদ্ধ ও দিশেহারা হয়ে পরেছে। তাদের বুকফাটা কান্না ও আর্তনাথে চার পাশের বাতাস ভারি হয়ে আসছে।
এলাকাবাসি জানায়, খুন হওয়া তরুণীর নাম চায়না আক্তার (৩০), পিতার নাম মৃত ইয়াদ আলী, গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর (চান্দের চালা)। চায়না ও তার বড় বোন রওশনারার বিয়ে না হওয়ায় বাপের বাড়িতে বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে থাকতেন। চায়নার বড়বোন রওশনারা জানায়, তারা দুই বোন বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে থেকে এলাকায় টাকার ব্যবসা (সুদের ব্যবসা) করতেন। সুদের টাকার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় এলাকার মেনহাজ দফাদার,আলমগীর, সোনিয়া ও আলু বেগমসহ কয়েক জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছিল। মামলায় তারা দুই বোন বাদী ছিল। আসামীদের সেই মামলায় টাঙ্গাইল কোর্টে হাজিরা ছিল আগামীকাল বৃহস্পতিবার ৭ এপ্রিল। এছাড়া এলাকায় আরও লোকজনের সঙ্গে সুদের টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। হাতিবান্ধা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, বাঁশতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শামুলল আলম শামছু, মাতাব্বর রবিন, শাজাহান, শামীম লোকজন একাধিকাবার শালিস করেছে। কিন্ত তারা কোন টাকা দেয়নি। দ্বিতীয় রোজার দিন হঠাৎ করে তার বোন চায়না বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুজি করেও তাকে না পেয়ে থানা পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার মাতাব্বরদের ঘটনাটি জানায়। আজ বুধবার গজারি বনের ভিতর চায়নার ক্ষতবিক্ষত লাশ এলাকার লোকজন দেখতে পায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। চায়না ও তার বৃদ্ধা মা সাবজানের অভিযোগ সুদের টাকার জন্যই চায়নাকে নির্মম ভাবে দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে নিয়ে খুন করে লাশ গজারি বনের ভিতর রেখেছিল। তারা হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
অপর দিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেছেন, চায়না ও রওশানা এই দুই বোনের বিয়ে না হওয়ায় এলাকায় ভিন্ন জনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তাদের ধারনা অনৈতিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই দুর্বৃত্তদের হাতে চায়না খুন হয়েছে। তারা খুনের প্রকৃত রহস্য উৎঘাটানসহ দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সাকাওয়াত হোসেন বলেন, খুনের রহস্য উৎঘাটনের চেষ্টা চলছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। চায়নার মা সাবজান বেগম বাদী হয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post