মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ত্রিভুজ প্রেমের বলি হয়েছে প্রবাসি ফিরোজ আল মামুন নামে এক ব্যক্তি।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনার পর প্রেমিক-প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার (২৩ জুলাই) মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রাসেদুল ইসরাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ত্রিভুজ প্রেম ঘটিত কারনেই ফিরোজ খুন হয়েছে। মামলার পর ত্রিভুজ প্রেমের বলি ফিরোজ আল মামুনের খুনের রহস্য উৎঘাটনসহ প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন এবং তার অপর প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ফিরোজ আল মামুনের খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের তরফপুর মাটিয়াগাড়া এলাকায় এ খুনের ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজ রেজা জানান, তরফপুর মাটিয়াগাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ফিরোজ আল মামুন। তিনি দীর্ঘ দিন মালেশিয়া (প্রভাসী)। সম্প্রতি তিনি ছুটিতে বাড়িতে আসেন। ফিরোজ আল মামুনের খুনের ঘটনাটি রহস্য জনক।
এলাকাবসি জানায়, ফিরোজ আল মামুন ছিলেন অবিবাহিত। প্রভাসে থাকা অবস্থায় এবং ছুটিতে বাড়িতে এসে একই এলাকার প্রভাসি শাহআলমের স্ত্রী ফিরোজা খাতুনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরেন। ফিরোজা খাতুন তার স্বামী শাহআলম ছাড়াও একই এলাকার জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া, প্রবাসী ফিরোজ আল মামুন এবং অপর এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়া ছিল। স্বামী শাহআলম বিদেশ থাকায় ফিরোজা খাতুন এলাকায় পরকীয়াসহ নানা অপকর্ম করে আসছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ নিয়ে এলাকায় বিচার শালিসও হয়েছে। সর্বশেষ ত্রিভুজ প্রেমের বলি হলেন প্রবাসী ফিরোজ আল মামুন। তরফপুর মাটিয়াগাড়া এলাকার অন্তত ১০ জন নারী পুরুষ এবং মির্জাপুর থানা পুলিশ সুত্র জানায়, গত সোমবার রাতে ফিরোজা বেগম টেলিফোনে বাড়িতে প্রেমিক ফিরোজ আল মামুনকে আসতে বলে। এর একটু পরে ঐ একই রাতে অপর প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া বাড়িতে প্রবেশ করে। এ নিয়ে ফিরোজা খাতুন ও দুই প্রেমিকের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরোজ আল মামুনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটে পরে। ফিরোজের লাশ গুম করার জন্য ফিরোজা খাতুন ও প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া বাড়ির পাশে পার্শ্ববর্তী ক্ষেতের আইলে ফেলে বাড়ি চলে আসে। গতকাল বুধবার স্থানীয় লোকজন ক্ষেতের আইলে ফিরোজ আল মামুনের লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
এদিকে ফিরোজ আল মামুনের খুনের ঘটনায় তার ভগ্নিপতি ফরহাদ মোল্লা বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মির্জাপুর থানা পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন ও অপর প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক জুযেল রানা জানিয়েছেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই ফিরোজ আল মামুন খুন হয়েছে। মামলার বাদী ফরহাদ মোল্লা, ফিরোজের মা জরিনা খাতুন, বোন শিল্পী ও কল্পনা আক্তার হত্যাকারীদের ফাঁসিসহ দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, ত্রিভুজ প্রেম ঘটিত কারনেই ফিরোজ আল মামুন খুন হয়েছে। ত্রিভুজ প্রেমের বলি ফিরোজ আল মামুনের খুনের রহস্য উৎঘাটনসহ প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন এবং তার অপর প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।