Print Date & Time : 9 August 2025 Saturday 2:44 am

মির্জাপুরে নদীর ভাঙ্গন, ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ফতেপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে বংশাই নদীর তীব্র ভাঙ্গনে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, গাছপালা, হাট বাজার, মসজিদ-মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পরেড়েছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার সহায় সম্ভল হারানো মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন। ভাঙ্গন প্রতিরোধে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শরীফা হকের নির্দেশনায় ও পানি উন্নয়নের বোর্ডের সহায়তায় মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসন ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলছেন।
সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করছেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক এ বি এম আরিফুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কহিনুর ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুল সাজ রিজন এবং উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও তিন নম্বর ফতেপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শুভাশিষ কর্মকারসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম আজ শুক্রবার ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন চিত্র ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের বিষয়টি জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) তিন নম্বর ফতেপুর ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গন কবলিত অসহায় পরিবার অভিযোগ করেন, বানকাটা, ঋষিপাড়া, সুতানরী, হাট ফতেপুর, থলপাড়া, হিলড়া আদাবাড়ি, পারদিঘী, চাকলেশ্বর, বৈলানপুর, গোড়াইল, গাড়াইলসহ বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির, হাট জাহার ও রাস্তাঘাট ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙ্গনে ফতেপুর বাজারে দক্ষিণ পাশ হতে পাকা রাস্তা বিলিন হয়ে মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন। নদী ভাঙ্গনে হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ. হাট ফতেপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ইউনিয়ন ভুমি অফিস, মির্জাপুর-বাসাইল রাস্তা, ফতেপুর-মহেড়া-মির্জাপুর রাস্তাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং হাট ফতেপুর হাট ও বাজার বিলিন হওয়ার পথে। বংশাই নদীর পাশে মির্জাপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড গাড়াইল ও পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, ৫ নং ওয়ার্ডের কুমারজানি ও বাওয়ার কুমারজানি হুমকির মুখে পরেছে।

প্রধান শিক্ষক ফরিদ হোসেন ও ইব্রাহীম মিয়া অভিযোগ করেন, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা ও ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মানসহ ফতেপুর ইউনিয়নকে রক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসি ইতিপুর্বে মানব বন্ধন কর্মসুচী করেছে। তারপরও স্থায়ী বাঁধ নির্মান হচ্ছে না। বংশাই নদীর ভাঙ্গনের ফলে ফতেপুর, থলপাড়া, বৈল্যানপুর, হিলড়া আদাবাড়ি বাজার, গোড়াইল, গাড়াইল, পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, বাওয়ার কুমারজানি, ত্রিমোহন, বান্দরমারা, যুগিরকোপা, রশিদ দেওহাটাসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন স্থাপনা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার সহায় সম্ভল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ফতেপুর ইউনিয়নের অন্তত নয়টি পয়েন্টে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসক শরীফা হক স্যারের নির্দেশনায় বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছিল। ভাঙ্গন মোকাবেলায় বিভিন্ন পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুল সাজ রিজন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কহিনুর ইসলাম বলেন, বর্ষা মেসৌম শুরু হলেই ফতেপুর ইউনিয়নের বংশাই নদীর আশপাশের এলাকায় তীব্র ভাঙ্গন দেখা দেয়। জেলা প্রশাসক মহোদয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকা পরিদর্শন করে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মাঝে দেওয়া হয়েছে ত্রাণ সামগ্রী। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্ময় করে স্থায়ী বাঁধ নির্মানসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।