মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা :
মির্জাপুর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ভুঁতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ন ভাঙ্গাচোরা ভবনের ছাঁদ নিয়ে নিয়ে বৃষ্টির পানি পরে মুল্যবান কাগজপত্র ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসে দাপ্তরিক সকল কাজকর্ম করছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান-মেম্বারগন।
আজ সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ভবনগুলো খুবই জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ।
উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সুত্র জানায়, মির্জাপুর উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদগুলো হচ্ছে ২ নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদ, ৬ নং আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদ, ৯ নং বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, ১০ নং গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদ এবং ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ। ২ নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডি এ মতিন বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন পাকুল্যা বাস স্টেশনের পুর্ব পাশে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। নানা জটিলতা এবং অর্থ সংকটের কারনে এই ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনটি সংস্কার এবং বহুতল ভবন করার জন্য কোন বরাদ্ধ আজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পরে মুল্যবান কাগজপত্র ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টিনসেট ভবনের সামনে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরের ভাঙ্গনের ফলে টিনসেট ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটিও বিলিন হওয়ার পথে। ৬ নং আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল ময়নাল হক বলেন, তার ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনের আরও করুণ অবস্থা। যে কোন সময় টিনসেট ভবনটি ভেঙ্গে পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। একটি নতুন ভবন নির্মানের জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে বহু আবেদন নিবেদন করে আসছেন। কিন্ত আজ পর্যন্ত নতুন বরাদ্ধ হয়নি এমনকি জরাজীর্ন টিনসেট ভবনটিও সংষ্কার করা হয়নি। ৯ নং বহুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবু সাইদ মিয়া ছাদু, ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজব হুমায়ুন কবীর এবং ভাওড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ অভিযোগ করেন, জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের ভবন ধ্বসে পরে মারাত্বক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জীবনের উপর ঝুঁকি নিয়ে তারা দাপ্তরিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। একতলা ভবন এবং টিনসেট ভবনগুলো দ্রুত সংষ্কার ও নতুন ভবন বরাদ্ধের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, মির্জাপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের ভবনগুলো খুবই জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি তিনি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরকে জানিয়েছেন। তারপও বরাদ্ধ না আসায় নতুন ভবন নির্মান হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার ৫ ইউনিয়ন পরিষদের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় চেয়ারম্যান-মেম্বারগন ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজ করে আসছেন। জেলা প্রশাসক মহোদয় সেসব ভবনগুলো পরিদর্শন করেছেন। উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ ৫ ইউনিয়ন পরিষদের জন্য নতুন ভবন নির্মানের জন্য ইতিমধ্যে বরাদ্ধ প্রদানসহ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এমপি, জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য/এসএইচ//