মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পারিবারিক বিরোধে একটি প্রভাবশালী মহল রুস্তম আলী (২৭) নামে অসহায় এক পরিবারকে গত পাঁচ মাস ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রভাবশালী মহলটি অসহায় পরিবারের বাড়িতে যাতায়াতের জন্য রাস্তার মাটি ভ্যেকু দিয়ে কেটে নিয়ে বাঁশের বেড়া নির্মান করে দেওয়ায় চরম বিপাকে ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামে এ অমানবিক ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেও পরিবারটি ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। ন্যায় বিচারের জন্য পরিবারটি দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
আজ শনিবার (৮ এপ্রিল) রুস্তম আলী জানায়, তার পিতা রুহুল আমিন এবং মাতা লিপি বেগমসহ পরিবারের সদস্যগন প্রভাবশালীদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, দাসপাড়া গ্রামের জামাল ভুইয়া, তার ছেলে দেলজুর রহমান রজব ভূইয়া, দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া, স্থানীয় একটি এনজিওতে অধিক মুনাফা লাভের জন্য কিছু টাকা রেখেছিলেন। ওই এনজিও থেকে তারা টাকা উত্তোলনও করেছেন। তার মা ওই এনজিওতে চাকরি করতেন। পারিবারিক সমস্যার কারনে তার মা লিপি বেগম এনজিও থেকে ২০২২ সালে চাকরি থেকে অব্যহতি নেন।
এদিকে দেশে করোনার মহামারী, দ্রব্য মুল্যের উর্ধ্বগতি, ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারনে এনজিওটি দেউলিয়া হয়ে পরে। এই সুযোগে জামাল গংরা লিপি বেগমের কাছে টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং টাকা না দিলে ভাতগ্রাম মৌজার সাবেক দাগ ৮২৫/ ৮২৬/ ৮২৭, হাল দাগ ৮১১/ ৮১২, খতিয়ান ৮১ এবং ডিবি ৯৪৭ এর ৪২ শতাংশ জমি ও তার বাড়িঘর দখল করে নিবে বলে হুমকি দেয়। অথচ এই জমিতে তারা যুগ যুগ ধরে বসবাস করছে এবং এটাই তাদের বেচে থাকার শেষ সম্ভল। লিপি বেগমের পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি এবং ১৪ মার্চ জামাল ভুইয়া, তার ছেলে দেলজুর রহমান রজব ভূইয়া, দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া, আমজাদ, বাবলী বেগম, লিমা বেগম ও রুমা বেগম রুস্তমের বাড়িতে যাতায়াতের জন্য রাস্তার মাটি কেটে নিয়ে বাঁশের বেড়া দিয়েছে। প্রভাবশালী মহল তাদের গত পাঁচ মাস ধরে অবরুদ্ধ রেখেছে।
এ বিষয়ে রুস্তম আলী মির্জাপুর থানায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের নামে মামলা করলেও পুলিশ কোন আসামিকে গ্রেফতার করেনি। মামলার পর উল্টো ঐ প্রভাবশালী মহল বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়ায় রুস্তম আলী ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগ করেন। ন্যায় বিচার চেয়ে এখন দ্বারে দ্বরে ঘুরছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দেলজুর হোসেন ভূইয়া রজবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এনজিওর মাধ্যমে লিপি বেগমের কাছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আমরা পাওনা রয়েছি। গ্রাম্য শালিসে টাকা দেওয়ার জন্য নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে লিপি বেগমের স্বাক্ষরও রয়েছে। তার পরও টাকা দিচ্ছে না।
রাস্তা কেটে ফেলা সম্পর্কে তিনি বলেন, এই জমি তাদের।
ভাতগ্রাম ইউনিয়নের দাসপাড়া এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার মো. শুকুর মিয়ার বলেন, তাদের মধ্যে টাকার লেনদেন নিয়ে বিরোধ রয়েছে। লিপি বেগমের বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা রজব ভূইয়া, দেলোয়ার ও জামাল গংরা তাদের দাবি করে কেটে ফেলেছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার উপ পরিদর্শক মজিবুর রহমান ও মো. শাজাহান মিয়া বলেন, এনজিওর টাকার লেনদেন এবং জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত চলছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//