Print Date & Time : 12 May 2025 Monday 4:15 am

মির্জাপুরে পাকুল্যায় আন্ডার পাস নির্মানের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসি

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের পাকুল্যায় বাস স্টেশনে আন্ডার পাস নির্মান অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। আন্ডার পাস নির্মানের দাবীতে দিন দিন ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসি। পাকুল্যা বাস স্টেশন এখন মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। গুরুত্বপুর্ন বাস স্টেশনে আন্ডার পাস নির্মান না হওয়ায় গত সাত বছরে পারাপার হওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, শিশু, ছাত্র এবং একই পরিবারের তিনজনসহ শতাধিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েক শতাধিক বলে ভুক্তভোগি এলাকাবাসি অভিযোগ করেছেন। একই অবস্থা মহাসড়কের শুভল্যা এবং গোড়াই টাঙ্গাইল কটন মিলস এরাকার। এলাকাবাসির আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রশাসন উক্ত স্থানে আন্ডার নির্মানের প্রতিশ্যতি দিলেও আজ পর্যন্ত সেই প্রতিশ্যুতি আলোর মুখ দেখেনি।

আজ শুক্রবার (৫ মে) ভুক্তভোগি এলাকাবাসি তাদরে ক্ষোভের কথা জানিয়ে এমন চিত্রই তুলে ধরেছেন।

জানা গেছে, মহাসড়কের পাকুল্যা এলাকায় আন্ডার পাস নির্মানের জন্য কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং ৭-৮ গ্রামের মানুষ আন্দোলনে নেমেছেন। আন্ডার পাস নির্মান না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলনসহ কঠোর কর্মসুচী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। একাধিকবার মহাসড়ক অবরোধের ফলে খান আহমেদ শুভ এমপি, টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ফোর লাইন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি ) মো. আবু ইসহাকসহ মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগন ২০২২ সালের ২৩ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও এলাকাবাসির সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্ডার পাস বা অভার ব্রিজ নির্মান জন্য প্রতিশ্রুতি দেন। দীর্ঘ দিনেও তাদরে সে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন বা আলোর মুখ দেখেনি। এ নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষেভের শেষ নেই।
২ নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডি এ মতিন, , পাকুল্যায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধের গনকবর, ৪-৫ টি গ্রামের সামাজিক কবরস্থান, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের, সাটিয়াচড়া ছাবদার আলী কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, আশপাশে ৪-৫ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি উচ্চ বিদ্যালয়, জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভূমি অফিস, জামুর্কি হাট ও পাকুল্যা বাজারসহ ১৩-১৪ টি গ্রাম রয়েছে। এছাড়া পাকুল্যা বাস স্টেশন দিয়ে পাশ^বর্তী দেলদুয়ার, নাগরপুর, ধামরাই, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকা, উত্তর বঙ্গ এবং জেলা সদর টাঙ্গাইলের সঙ্গে যাতায়াত করে আসছে। স্থানটি গুরুত্বপুর্ন হলেও এখানে আন্ডার পাস বা অভার ব্রিজ নির্মান না করায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসির যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। সরকারের কাছে অনতিবিলম্বে এখানে আন্ডার পাস বা অভার ব্রিজ নির্মান চাই।
এদিকে জামুর্কি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাদেক আলী এবং জামুর্কি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. আলতাব হোসেনহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চার রেন চালু হওয়ার গত সাত বছরের ব্যবধানে এখানে পারাপারের সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা ও একই পরিবোরের তিনজনসহ শতাধিক জন নারী পুরুষ ও শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া রাস্তা পারাপারের সময় ঘাতক বাসের চাকায় পৃষ্ট হয়ে মা-মেয়ে-ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার প্রতিবাদে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্ডার পাস নির্মানের দাবীতে বিক্ষুব্দ এলাকাবাসি মহাসড়ক অবরোধ করে একাধিকবার মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তানগন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্বতা ঘোষনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্ডার পাস বা অভার ব্রিজ নির্মানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি বলে তারা অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক-বঙ্গবন্ধু সেতু একসেস রোড নির্মানকারী সংস্থার প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি ) মো. আবু ইসহাক বলেছেন, যে সব এলাকায় আন্ডার পাস বা অভার নির্মান প্রয়োজন এগুলোর তালিকা করে করে অর্থ বরাদ্ধ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কে জানানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে নির্মান কাজ করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুল হক বলেন, এলাকাবাসির দাবী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদরে দিক নির্দেশনায় পাকুল্যা এলাকায় আন্ডার পাস বা অভার ব্রিজ নির্মানের জন্য সার্ভে করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মান কাজ শুরু করা হবে।

দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//