মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অপরাধ দমনে চলছে পুলিশের সাড়াশি অভিযান। অস্ত্রসহ আন্তজেলা ডাকাত, মাদক কারবারি ও পলাতক আসামিসহ গ্রেফতার কয়েক শতাধিক।
আজ রবিবার (২৯ জানুয়ারি) মির্জাপুর থানা সুত্র জানায়, গত ১ জানুয়ারী থেকে আজ ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাড়াশি অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ আন্তজেলা বেশ কয়েকজন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রামে গ্রামে বিট পুলিশিং এর সেবার পাশাপাশি জনগনের সেবা নিশ্চিত করতে থানায় বসানো হয়েছে হেল্প ডেক্স। পুলিশের যে কোন সেবা কার্যক্রম প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারন মানুষের দৌড় গোড়ায় পৌঁছিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিট পুলিশিং সেবা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলে জানেিয়ছেন পুলিশ। কমে গেছে মামলা জট। গুরুত্বপুর্ন স্থানে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
গ্রেফতার হয়েছে মোটর সাইকেল চোর চক্রের সক্রীয় বেশ কয়েকজন সদস্য। উদ্ধার হয়েছে মোটর সাইকেলচোরাই, মালামাল ও মাদক । এছাড়া খুন, মাদক, দস্যুতা, চুরি, বিভিন্ন মামলায় পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার হয়েছে।
থানার সেকেন্ডে অফিসার মো. মোশারফ হোসেন ও ওসি (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের নির্দেশনায় সারা দেশের ন্যায় মির্জাপুর উপজেলায় বিট পুলিশিং সেবা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে বিট পুলিশিং অফিস নেওয়া হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নের্তৃবৃন্দ, পৌরসভার মেয়র-কাইন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার, সুশিল সমাজের নের্তৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সমন্ময়ে মতবিনিময় সভার মাধ্যমে বিট পুলিশিং কার্যক্রম তুলে ধরছেন। মির্জাপুর থানার পুলিশ সদস্যগন পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট, বাসাবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে বিভিন্ন স্লোগান সম্ভলিত স্টিকার লাগাচ্ছেন। এছাড়া মির্জাপুর থানার ফটকে লালানো হয়েছে অফিসার ইনচার্জের নির্দেশনা স্টিকার। এখানে লেখা রয়েছে থানায় জিডি, অভিযোগ, মামালা রুজু, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, চাকুরির ভেরিফিকেশনসহ যে কোন কাজে কোন টাকা লাগেনা। বসানো হয়েছে হেল্প ডেক্স। পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
এ বিষয়ে কয়েকজন সেবা গ্রহনকারী নারী পুরুষের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, থানায় পুলিশের সেবা কার্যক্রম অনেক বদলে গেছে। প্রতিটি কাজে ডিজিটাল করায় আমাদের সাধারন জনগনের ভোগান্তি অনেক কমে গেছে। বিভিন্ন কাজে পুলিশ সদস্যগন আন্তরিকতার সঙ্গে সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এটি একটি মহতী উদ্যোগ বলে সেবা নিতে আসা সাধারন লোকজন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে লতিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন রনি এবং গোড়াই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ হুমায়ুন কবীর বলেন,অপরাধ দমনে পুলিশ সাড়াশি অভিযানে নেমেছেন। বিট পুলিশিং সেবা কার্যক্রম চালু হওয়ার পর এলাকায় অপরাধ প্রবনতা অনেক কমে গেছে। এটা পুলিশ বাহিনী এবং সরকারের একটি মহতী উদ্যোগ।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে ১৭ টি বিট পুলিশিং সেবা সেন্টার (অফিস) উদ্ধোধন করা হয়েছে। প্রতিটি বিট পুলিশিং সেবা কেন্দ্রে (অফিসে) মির্জাপুর থানার একজন এসআই, একজন এএসআই, দুই জন কন্সটেবল এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ নিজ নিজ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগন সেবা কেন্দ্র পরিচালনা করবেন। এই কমিটি নিয়মিত কেন্দ্রে বসে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি গ্রামের সাধারন জনগনের যে কোন সমস্যার সমাধান করবেন। বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নের অপরাধ প্রবনতা, মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মারামারি, বাল্য বিবাহ, নারী নির্যাতনসহ সাধারন ঘটনা নিয়ে মামলা মোকদ্দমা কমে গেছে। ফলে জনগনের ভোগান্তি যেমন কমছে, তেমনি তারা আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছেন না। গত কয়েক মাসের ব্যবধানে কয়েক শতাধিক অপরাধী গ্রেফতার হয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//