মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তরফপুর ইউনিয়নের তরফপুর মাটিয়াগাড়া এলাকায় ত্রিভুজ প্রেমের বলি প্রবাসি ফিরোজ আল মামুন খুনের রহস্য উৎঘাটন হয়েছে।
ত্রিভুজ প্রেমের বলি ফিরোজ আল মামুনের হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে প্রেমিকা ফিরোজা খাতুনকে তিন দিনের রিমান্ডে এনেছেন মির্জাপুর থানা পুলিশ। রিমান্ডের প্রথম দিনে তাদের স্বীকারোক্তি ও তথ্যমতে ঘাতক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়ার দোকান থেকে খুনের আলামত হিসেবে টেঁটা উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. জুয়েল রানা এ তথ্য জানান। এ দিকে ত্রিভুজ প্রেমের বলি ফিরোজ আল মামুন খুনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর খুনের মামলাটি অধিক তদন্তের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এর আগে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলামসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন ঘটনাস্তল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ সুত্র জানায়, তরফপুর মাটিয়াগাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ফিরোজ আল মামুন। তিনি দীর্ঘ দিন মালেশিয়া ছিলেন। রোজার ঈদের সময় তিনি ছুটিতে বাড়িতে আসেন। এর পর আর তিনি বিদেশ যাননি। ফিরোজ আল মামুন ছিলেন অবিবাহিত। একই এলাকার প্রভাসি শাহআলমের স্ত্রী ফিরোজা খাতুনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরেন। ফিরেজা খাতুন ছিলেন তার ফুফাতো বোন। ফিরোজা খাতুন তার স্বামী শাহআলম এর সঙ্গে সংসার করলেও তার স্বামীর বোন জামাই একই এলাকার জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া, প্রভাসী ফিরোজ আল মামুন এবং অপর এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে। গত সোমবার রাতে ফিরোজা বেগম মোবাইল ফোনে প্রেমিক ফিরোজ আল মামুনকে আসতে বলে। একই রাতে অপর প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া বাড়িতে প্রবেশ করে। ফিরোজা বেগমের বাড়িতে ফিরোজ আল মামুনকে দেখে জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরোজ আল মামুনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে ও শরীরে টেঁটা বিদ্ধ করে। বাঁচার জন্য ফিরোজ দৌড়াতে গেলে পরে মাটিতে লুটে পরে। ফিরোজের লাশ গুম করার জন্য প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া ও ফিরোজা খাতুনসহ তাদের সহযোগিরা বাড়ির পাশে ক্ষেতের আইলে ফেলে বাড়ি চলে আসে। গত বুধবার স্থানীয় লোকজন ক্ষেতের আইলে ফিরোজ আল মামুনের লাশ পরে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে ফিরোজ আল মামুনের খুনের ঘটনায় তার ভগ্নিপতি ফরহাদ মোল্লা বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মির্জাপুর থানা পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন ও অপর প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন। আদালতের বিচারক রাহেলা সিরাজম তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের প্রথম দিনে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ফিরোজকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। ঘাতক সোনা মিয়ার দোকান থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি টেঁটা উদ্ধার হয়েছে। ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই ফিরোজ আল মামুন খুন হয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক জুয়েল রানা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই ফিরোজ আল মামুন খুন হয়েছে। খুনের রহস্য উৎঘাটন প্রেমিকা ফিরোজা খাতুন এবং তার অপর প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছিল। বিচারক আসামীদের রিমান্ড দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

Discussion about this post