Print Date & Time : 11 May 2025 Sunday 3:48 am

মির্জাপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গুলো দৃষ্টিনন্দন সাজে সজ্জিত

স্টাফ রিপোর্টার ।।টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১৭০ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার ও বঙ্গবন্ধু লাইব্রেরী স্থাপনসহ বাংলা বর্নমালা এবং বিভিন্ন প্রকৃতির সাজে সজ্জিত করা হয়েছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ঝড়েপড়া রোধ, শিক্ষার গুনগত পরিবর্তন ও মানউন্নয়নে বিদ্যালয় লাল-সবুজে সজ্জিত করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের বাহিরের দেয়াল ও ভিতরের শ্রেণী কক্ষে আঁকা হয়েছে রং-বেরংয়ের ছবি।

শনিবার (৩০) জুলাই) মির্জাপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে,  সু-সজ্জিত পরিবেশ।

অভিভাবক ও শিক্ষকগন জানিয়েছেন স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং এলাকার সুধীজন যৌথ উদ্যোগ নিয়ে বিদ্যালয়গুলো সজ্জিত করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উপর কঠোর নজরদারীসহ উন্নয়নওে জন্য সার্বিক ভাবে আর্থিক সহযোগিতা করছেন। শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওার লক্ষে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু কর্নার ও লাইব্রেরীসহ লাল-সবুজে সজ্জিত করা হয়েছে।

শনিবার (৩০ জুলাই) মির্জাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্র জানায়, মির্জাপুর পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাদগ্রাম, ভাওড়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল এই ১৪ ইউনিয়নে ১৭০ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। প্রাক-প্রাথমিক (শিশু শ্রেণীতে) শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৬ হাজার। ৮ টি ক্লাস্টালের অধিনে মির্জাপুর উপজেলার ১৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষক ও ৪০ হাজার শিক্ষার্থীদের দেখাশোনা ও নজরদারী করে আসছেন শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসারগন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা বান্ধব সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় মির্জাপুর উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয় পাকা ভবনসহ নানা ভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে বলে শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাগন জানান। এছাড়া দক্ষ শিক্ষক গড়ে তুলতে উপজেলা শিক্ষা অফিস ও ইউআরসির মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রতিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষকদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক সুফিয়া খাতুন ও সহকারী শিক্ষক ফরহাদ হোসেন,  শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিশুদের ঝড়েপড়া রোধ, শিক্ষার গুনগত পরিবর্তন ও মানউন্নয়নে বিপুল অংকের অর্থ ব্যায়ে ১৭০ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাহিরের দেয়াল লাল-সবুজে সজ্জিত করন ও শ্রেণী কক্ষের ভিতরে রং-বেরংয়ের ছবি আঁকা হয়েছে। ছবির মধ্যে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, প্রধান মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, জাতীয় চার নেতা বিভিন্ন কবি ও সাহিত্যিক, দানবীর আরপি সাহা, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী, কবি, মিনা কার্টুন, বাংলা ও ইংরেজী বর্ণ, বিভিন্ন প্রজাতির ফল, ফুল, গাছ, নদী। প্রতিটি বিদ্যালয় এখন দৃষ্টি নন্দন ও পাঠাদানের উপযোগী হওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগনও খুঁশি। তাদের মতে শিশুরা একন আনন্দের সহিত বিদ্যালয়ে এসে পাঠদান করছে।

সদরের ২৩ নং বাইমহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরিষাদাইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুষ্টকামুরী মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কান্ঠারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকুর‌্যা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোড়াইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২ নং আগধল্যা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, লাল-সবুজে সজ্জিত করন।

সরিষাদাইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধাক্ষ শিক্ষক মুক্তি সাহা বলেন, সাবেক এমপি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন এমপির উদ্যোগে মির্জাপুর উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গনগত মান ও উন্নয়ন শুরু হয়। এরপর বর্তমান এমপি খান আহমেদ শুভ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু, উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় মির্জাপুরে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। শিশুদের ঝড়েপড়া রোধ, শতভাগ উপস্থিতি, সাপ্তাকি, মাসিক, ত্রৈমাসিক, প্রথম সাময়কি, দ্বিতীয় সাময়িক ও বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। প্রাথমিক শিক্ষার ফলাফলে দিক দিয়ে মির্জাপুর উপজেলা টাঙ্গাইল জেলা তথা ঢাকা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে ভাল অবস্থান বলে তিনি জানিয়েছেন।

উপজেলা বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতিরর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক দেওয়ার আজাদ রহমান এবং মির্জাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মঞ্জুর কাদের ও সাধারন সম্পাদক মোতাহর হোসেন বলেন, স্থানীয় এমপি,  ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক মন্ডলী, অভিভাবক ও প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দের সঠিক ও সময় উপযোগি দিক নির্দেশনা ও পরামর্শে মির্জাপুরে প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজুর রহমান ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় মির্জাপুর উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থান ভাল। প্রতিটি বিদ্যালয়ে মানসম্মন পাঠদানসহ নানা সাজে-সজ্জিত করন করে শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে ফলাফল ও শিক্ষার পরিবেশ যাতে আরও ভাল করা যায় সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আর//দৈনিক দেশতথ্য//৩০ জুলাই-২০২২//