মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তীব্র নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে বিভিন্ন স্থাপনা। বংশাই নদীর ফতেপুর ইউনিয়নের হাট ফতেপুর বাজার ও হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান রক্ষায় গাইড বাঁধ ধসে পরেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে নির্মিত গাইড বাঁধ ধ্বসে যাওয়ায় হুমকির মুখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। একই অবস্থা লৌহজং নদীর আশাপাশ। তীব্র ভাঙ্গনের ফলে এলাকায় তীব্র আতংক দেখা দিয়েছে। রবিবার (২৪ জুলাই) ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার বিস্তারিত তুলে ধরেন। ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি বলেন, বংশাই ও লৌহজং নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং ক্ষতিগ্রস্থ্যদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ হোসেন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক মীর সাব্বির হোসেন জানান, বংশাই নদীর সন্নিকটে হাট ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ. হাট ফতেপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ইউনিয়ন ভুমি অফিস, মির্জাপুর-বাসাইল রাস্তা, ফতেপুর-মহেড়া-মির্জাপুর রাস্তাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং হাট ফতেপুর হাট ও বাজার রয়েছে। বাদ যাচ্ছে না গোরস্থান, মসজিদ মন্দির। প্রমত্তা ও করালগ্রাসী বংশাই নদীর ভাঙ্গনে বিদ্যালয়ের দক্ষিন পাশ ভেঙ্গে পরেছে। এখন পুরো এলাকা হুমিকর মুখে।
জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডি এ মতিন এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিকুর রহমান তালুকদার রাজিবসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, লৌহজং নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। মাঝালিয়া, গুনটিয়া, চুকুরিয়া, বরাটি, পুষ্টকামুরী, দেওহাটা, কোর্ট বহুরিয়া, বহুরিয়া, কামারপাড়া, নাগরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা নদী ভাঙ্গনে বহু পরিবার দিশেহারা হয়ে পরেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা-ঘাট, হাট বাজারসহ ফসলি জমি।
লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বলেন, নদী ভাঙ্গনের ফলে বংশাই নদীর থলপাড়া ব্রিজ, ত্রিমোহন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন ব্রিজ, কোদালিয়া লতিফপুর ব্রিজ, হাটুভাঙ্গা ব্রিজ, লৌহজং নদীর উপর নির্মিত গুনটিয়া ব্রিজ, বরাটি এলাকায় বাবু দুঃখীরাম রাজবংশী ব্রিজ, পুষ্টকামুরী ব্রিজ, পাহাড়পুর ব্রিজ, বহুরিয়া এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নুরু ব্রিজ এবং ওয়ার্শি ব্রিজ হুমকির মুখে ।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মির্জাপুর উপজেলার হাট ফতেপুর বাজার ও স্কুল রক্ষার জন্য বংশাই নদীর পাড়ের গাইড বাঁধে ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। বরাদ্ধ আরও বাড়ানোর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জাননো হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ফতেপুর ইউনিয়ন, মির্জাপুর পৌরসভা, লৌহজং ও বংশাই নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। বিষয়টি মাননয়ি জাতীয় সংসদ সদস্য এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ পেলে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের মধ্যে সহায়তা করা হবে।
এ ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ এমপি বলেন, বংশাই ও লৌহজং নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এলাকা পরিদর্শন করে উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post