মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা:
মির্জাপুরে তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ ছড়িয়ে পরেছে। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্ক নারী পুরুষদের মাখেও ডায়রিয়া ছড়িয়ে পরেছে । আজ শনিবার হাসপাতাল ও বেসরকারী ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের উপচেপরা ভিড়। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
মির্জাপুর উপজেলায় গত ২০-২৫ দিন ধরে তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে উঠছে জনজীবন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, গোড়াই, লতিফপুর, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ডায়রিয়া জনিত রোগ ছড়িয়ে পরেছে। সরকারী হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীদের ভিড় বাড়ছে। গরমের কারনে শিশুদের জ্বর, শ্বাস তন্ত্র, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া এবং বয়স্ক নারী পুরুষদের মধ্যে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পরেছে। আজ শনিবার মির্জাপুর উপজেলা সদরের কুমুদিনী হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীদের উপচেপরা ভিড়। বহিঃ বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে কয়েক শতাধিক অভিভাবক ডায়রিয়া জনিত রোগে অসুস্থ্য শিশুদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য লাইনে দাড়িয়ে রয়েছেন। শিশু বিভাগে ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে এক শিশু কন্যার মা সুরাইয়ার মা লাইলী বেগম বলেন, মেয়েকে নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে ভর্তি রয়েছেন। ডায়রিয়া ও সঙ্গে জ¦র ছিল। এখন আগের চেয়ে তার মেয়ে ভাল আছে।
চাইল্ড রিচার্স ফাউন্ডেশনের বহিঃবিভাগের চিকিৎসক বলেন, বহিঃবিভাগে প্রতি দিন ২০০-২৫০ জন শিশু চিকিৎসা নিতে আসছে। এদের মধ্যে বেশী অসুস্থ শিশু ভর্তি হচ্ছে ৫০-৬০ জন। চিকিৎসা নিতে আসা শিশূদের অভিভাবকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কুমুদিনী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসক এবং নার্সরা চিকিৎসা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কুমুদিনী হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক বলেন, বর্তমান সময়ে আবহাওয়া পরিবর্তন এবং গরমের কারনে শিশুদের ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন উপসর্গ বেশি দেখা দিয়েছে। এখানকার চিকিৎসক ও নার্সগন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিতে। শিশুদের অভিভাবকদের রোগ প্রতিরোধের জন্য ভাল পোষাক, তরল খাবার ও পুষ্টি জনিত খাবারসহ নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। একই অবস্থা দেখা গেছে বেশ কয়েকটি বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে।
এ ব্যাপারে কুমুদিনী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (পেডিয়াট্রিকস) এমপিএইচ (নিপসম) ডা. এ বি এম আলী হাসান বলেন, গত বেশ কিছু দিন ধরে তীব্র গরমের কারনে শিশুসহ বয়স্কদের মধ্যে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পরেছে। বিশেষ করে শিশুদের জ্বর, শ্বাস তন্ত্র, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া। এতে ভয়ের কোন কারন নেই। আবহাওয়া পরিবর্তন এবং গরমের কারনে এ রোগ হচ্ছে। যারা চিকিৎসার জন্য আসছেন হাসপাতালের চিকিৎসকগন রোগীদের যত্ন সহকারে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফরিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলা সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে এবং মা শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্য সহকারীগন ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক পরামর্শ ও কাজ করে যাচ্ছেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post