মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন এখন পানির নিচে। টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিতে বংশাই ও লৌহজং নদীতে পানি বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ইউনিয়ে তলিয়ে গেছে কাঁচা-আঁধাপাকা বোরো ধান। বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পরেছে প্রান্তিক কৃষকরা। ধান কাটা শ্রমিক সংকট থাকায় পানির নিচে পচে যাচ্ছে বোরো ধান। উপজেলা কৃষি বিভাগ বলেছেন, বৃষ্টির পানিতে পানিতে তলিয়ে যাওয়া আঁধা পাকা ধান কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার (২১ মে ) উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে চলতি বছর বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ হাজার হেক্টর। প্রথম দিক থেকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর উৎপাদন বেশী হয়েছে। ধানের উৎপান ও ফলন ভাল হলেও গত ২০-২৫ দিন ধরে টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিতে প্রথমে নিচু এরাকার জমির বোরো ধান তলিয়ে যায়। গত ৪-৫ দিনের ব্যবধানে প্রচুর বৃষ্টির ফলে কৃষকরা পরেছেন মহা বিপাকে। উপজেলার ফতেপুর, লতিফপুর, আজগানা, তরফপুর, মহেড়া, জামুর্কি, পৌরসভা, বানাইর, আনাইতারা, ওয়াশি, ভাওড়া, ভাতগ্রাম, বহুরিয়া ও গোড়াই ইউনিয়নের নিচু জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। কাঁচা ও আধাঁ পাকা ধান নিয়ে চরম বিপাকে পরেচেন কৃষকরা।
অপর দিকে ১২০০শ থেকে ১৩০০শ টাকাও মিলছে না ধান কাটা শ্রমিক। আজ শনিবার খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অসময়ে উজান থেকে নেমে আসা পানি এবং বৃষ্টিতে পুষ্টকামুরী, গোড়াইল, থলপাড়া, ঘোনাপাড়া, পারদিঘি, বৈলানপুর, দেওভোগ, ইচাইল, কুরনি, ভাওড়াসহ গ্রামের কয়েকশ হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে গেছে। ফলে চরম বিপাকে পরেছেন প্রান্তিক কৃষকরা। একই ভাবে উপজেলার লতিফপুর, আজগানা, বহুরিয়া এবং ভাওড়া ইউনিয়নেও কয়েক শত হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে গেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন, মো. রফিকুল ইসলাম সিকদার এবং আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন।
ফতেপুর এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান (৪৬) ও আজগানা এলাকার কৃষক আমির হোসেন (৬০) অভিযোগ, অসময়ে নদীতে পানি আসায় এবং বৃষ্টির পানিতে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। কাঁচা ও আঁধা পাকা ধান তলিয়ে গিয়ে তারা এ বছর একমুঠো বোরো ধানও ঘরে তুলতে পারবে না। ধার দেনা করে বোরো আবাদ করলেও এখন তারা হতাশার মধ্যে পরেছেন। সারা বছর কি খাবে এ নিয়ে দুঃচিন্তার শেষ নেই। তাদের মত শতশত কৃষকের এমন অভিযোগ।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মি. সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, অসময়ে উজান থেকে নদীতে পানি আসায় এবং বৃষ্টির পানিতে কয়েকটি ইউনিয়নের নিচু এলাকার বোরো ধান তলিয়ে গেছে। পানিতে বোরো ধান তলিয়ে গেলেও কাঁচা ও আঁধা পাকা ধান কেটে ফেলার জন্য ঐ সব এলাকার কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাগন প্রতিটি এলাকার কৃষকদের নানা ভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//