প্রতিমা ভাংচুর, দুই গ্রুপ মুখোমুখী এলাকায় আতংক
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এলাকায় আধিপত্ত বিস্তার নিয়ে দুবৃত্তরা মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাংচুর এবং মাঠের দুই পাশে গাছপালা কেটে ফেলেছে। ঘটনার পর দুই গ্রুপ মুখোমুখী হওয়ায় এলাকার আতংক দেখা দিয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের ভুষুন্ডি রথখোলা শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ নাথ মন্দিরে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) মন্দির কমিটির সভাপতি বাবু স্বপন কুমার মন্ডল ও সাধারন সম্পাদক বাবু দুলাল চন্দ্র শীল জানান, মন্দিরের জমি ও সামনের খেলার মাঠ নিয়ে এলাকার কিছু ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ঐ ব্যক্তিরা বিভিন্ন কৌশলে খেলার মাঠসহ মন্দিরের জমি দখলের চেষ্টা করে আসছে। মন্দিরের জমি রক্ষার জন্য তারা পুলিশ সুপার, টাঙ্গাইল জজ কোর্ট ও মির্জাপুর থানায় মামলা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট মন্দিরের উন্নয়ন এবং খেলার মাঠের চার পাশ বাউন্ডারী নির্মানের জন্য দশ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে। অনুদানের টাকায় ইতোমধ্যেই মাঠের চারপাশে বাউন্ডারী নির্মান শুরু হয়েছে।
এদিকে মাঠে খেলাকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুরে এলাকার কিছু দুবৃত্ত মাঠের চার পাশে রোপনকৃত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলে এবং মন্দিরে হামলা চালিয়ে কয়েকটি প্রতিভা ভাংচুর করে। মন্দিরের পুরোহিতসহ গন্যমান্য ব্যক্তিগন বাঁধা দিতে গেলে তাদের নানা ভাবে হুমকি দেয়। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ব্যাপারে ১৬-১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবুল খায়ের বকশী, শান্ত ও রুবেলসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভুষুন্ডী রথখোলা মন্দির এলাকায় খেলার মাঠকে কেন্দ্র করে এলাকায় পরিবেশ নষ্ট করার জন্য স্বপন মন্ডল, প্রভাষ সরকার, শংকর সরকার, মধু সরকার, দুলাল, মনাশীল ও কুরানসহ ২০-২৫ জন ব্যক্তি পরিকল্পিত ভাবে মন্দিরের কয়েকটি প্রতিভা ভাংচুর করেছে। ইতিপুর্বেও তারা এলাকায় এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানিয়েছেন, অভিযোগের পর সহকারী পুলিশ সুপার (মির্জাপুর-নাগরপুর সার্কেল) এ এস এম আবু মনসুর মুসা, মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান, মির্জাপুর থানার সেকেন্ড অফিসার মো. মোশারফ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ঘটনা মিমাংশার চেষ্টা চলছে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনার পর এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুলাই ১৪,২০২২//

Discussion about this post