Print Date & Time : 4 July 2025 Friday 11:24 pm

মির্জাপুরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পুরোদমে চলছে ক্লাস

খুঁশি শিক্ষার্থী অভিভাবক। মনিটরিংয়ে উপজেলা প্রশাসন

সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরোদমে চলছে পাঠদান। দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর ক্লাসে ফিরে পাঠদান করতে পেরে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দিত, তেমনি খুঁশি অভিভাবকগন। উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং উপজেলা প্রশাসন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে পাঠদান কার্যক্রম। বুধবার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে চমৎকার পরিবেশে চলছে পাঠদান কর্মসুচী।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্র জানায়, মির্জাপুর পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৪ টি, দাখিল মাদ্রাসা ১৪ টি, কলেজ ১০ টি এবং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৭০ টি। মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় এক লাখ তিন হাজার। করোনার কারনে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত ২২ ফেব্রুয়ারি এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় গত ২ মার্চ খুলে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চলছে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে শ্রেণী কক্ষে সরাসরি পাঠদান কার্যক্রম। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি, প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকগন শ্রেণী কক্ষে শিক্ষার্থীদের পেয়ে আনন্দিত। পুরো বিষয় মনিটরিং করছেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা সদরের বাইমহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফরহাদ হোসেন জানান, করোনার প্রকোপ কমে আসায় সরকারী নির্দেশনায় শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিদ্যালয়ে আসছে। বিদ্যালয়ে ঢুকার সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে এবং মুখে মাকস পরে শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করছে। সকাল নয়টা থেকে বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। দীর্ঘ দিন পর শিক্ষার্থীদের কাছে পেয়ে তারা বেশ উচ্ছসিত এবং আনন্দিত। শিক্ষার্থীরাও উৎসাহ নিয়ে পাঠদান করে যাচ্ছে। অভিভাবকগন সার্বিক সহযোগিতা করছেন। একই কথা জানিয়েছেন সরিষাদাইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুক্তি সাহা এবং সিবিএ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা উর্মিলা পাল। তারা বলেন শিশুরা আমাদের সন্তানের মত। দীর্ঘ দিন পর তাদের কাছে পেয়ে মনটা ভরে গেছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি শিশুদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য। শিক্ষার্থীদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মাসুম এবং সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী জুঁই জানায়, দীর্ঘ দিন সহপাঠী এবং শিক্ষকদের কাছে পেয়ে আমরা আনন্দিত।

রাজাবাড়ি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মফিজুর রহমান স্বপন, মির্জাপুর আফাজ উদ্দিন সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. ফজলুল করিম এবং উত্তর পেকুয়া জাগরণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরীন আক্তার বলেন, মহামারী করোনার কারনে আর যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ না হয়। তারা বলেন, সরকারী নির্দেশনা এবং উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় পাঠদান করতে পেরে আমরা খুঁশি ও আনন্দিত।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদ এবং প্রাথমিক শিক্ষা অপিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরোদমে ক্লাস হচ্ছে। নিয়মিত  ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করা হচ্ছে। শিক্ষাদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখেই পাঠদান চলছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা হচ্ছে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা সে জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মার্চ ০৯, ২০২২//