মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : মির্জাপুরে তরুনী খুনের ১০ দিনেও রহস্য উৎঘাটন হয়নি। স্বজনদের কান্নায় এখনও চার পাশের বাতাস ভারি হয়ে আসছে। নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজের দুই দিন পর গজারি বনের ভিতর থেকে গত (৬ এপ্রিল) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর (চান্দের চালা) গ্রামে চাঞ্চল্যকর ও অমানবিক এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। মেয়েকে হারিয়ে বৃদ্ধ মা সাবজান বেগম (৭০) ও তার চার বোন এখন বাকরুদ্ধ ও দিশেহারা হয়ে পরেছে। তাদের বুকফাটা কান্না ও আর্তনাথে চার পাশের বাতাস এখও ভারি হয়ে আসছে। এলাকাবাসি তরুনী খুনের মুল ঘটনা উৎঘাটনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) এলাকাবাসি জানায়, খুন হওয়া তরুনীর নাম চায়না আক্তার (৩০), পিতার নাম মৃত ইয়াদ আলী, গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর (চান্দের চালা)। চায়না ও তার বড় বোন রওশনারার বিয়ে না হওয়ায় বাপের বাড়িতে বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে থাকতেন। চায়নার বড়বোন রওশনারা জানায়, তারা দুই বোন বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে থেকে এলাকায় টাকার ব্যবসা (সুদের ব্যবসা) করতেন। সুদের টাকার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় এলাকার মেনহাজ দফাদার,আলমগীর, সোনিয়া ও আলু বেগমসহ কয়েক জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছিল। মামলায় তারা দুই বোন বাদী ছিল। আসামীদের সেই মামলায় টাঙ্গাইল কোর্টে হাজিরা ছিল গত ৭ এপ্রিল। মামলার হাজিরার এক দিন আগে খুন হয় চায়না।
এদিকে এলাকায় আরও লোকজনের সঙ্গে সুদের টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। হাতিবান্ধা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, বাঁশতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শামুলল আলম শামছু, মাতাব্বর রবিন, শাজাহান, শামীম লোকজন একাধিকাবার শালিস করেছে। কিন্ত তারা কোন টাকা দেয়নি। দ্বিতীয় রোজার দিন হঠাৎ করে তার বোন চায়না বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুজি করেও তাকে না পেয়ে থানা পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার মাতাব্বরদের ঘটনাটি জানায়। গত ৬ এপ্রিল গজারি বনের ভিতর চায়নার ক্ষতবিক্ষত লাশ এলাকার লোকজন দেখতে পায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। চায়না ও তার বৃদ্ধা মা সাবজানের অভিযোগ সুদের টাকার জন্যই চায়নাকে নির্মম ভাবে দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে নিয়ে খুন করে লাশ গজারি বনের ভিতর রেখেছিল। চায়না হত্যার পর তার মা বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় ঐ দিনই মামলা দায়ের করলেও গত ১০ দিনেও হত্যার রহস্য উৎঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তারা হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post