মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল:
দেশের সর্বোচ্চ ২৬০ মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায়।
প্রতিটি মন্ডপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবস্তা জোরদার গ্রহন করেছেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনসহ মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসন।
মির্জাপুরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ও উৎসব মুখর পরিবেশে প্রতিটি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের লক্ষে পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুতিমুলক সভা করেছেন।
আজ মির্জাপুর অডিটরিয়ামে সভায় বিস্তারিত তুলে ধরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মির্জাপুর সার্কেল আদনান মুস্তাফিজ।
এ সময় ওসি মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম, ওসি তদন্ত সালাউদ্দিন, দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. গিয়াস উদ্দিনসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ উপস্থিথ ছিলেন। এর আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবন্দ, সুশিল সমাজ, আইন-শ্ঙৃখলা রক্সাকারী বাহিনীর সদস্য, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধি নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন এ বছর মির্জাপুরে পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৬০ মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। টাঙ্গাইল জেলা তথা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশী মন্ডপ তৈরী হচ্ছে। এ জন্য আইন-শৃঙ্গলার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সনাতন ধর্মের পূজারীগন যাতে নির্বিগ্নে পূজা উদযাপান করতে পারেন সে জন্য প্রশাসন থেকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থাসহ সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মির্জাপুর শাখার সভাপতি বাবু বিকাশ গোষ্মামী ও সাধারণ সম্পাদক বাবু প্রমথেস গোষ্মামী সংকর জানান, এ বছর মির্জাপুর পৌরসভা ও উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে ২৬০ মন্ডপে শারদীয়া দুর্গা পুঁজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি মন্ডপ তৈরি হয়েছে মির্জাপুর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে। এখানে ৫৩ মন্ডবে অনুষ্ঠিত হবে পূজাদুর্গা পূজা। দ্বিতীয় জামুর্কি ইউনিয়নে ৩৩ টি এবং তৃতীয় ভাতগ্রাম ইউনিয়নে ৩২ টি মন্ডপে উৎসব মুখর আনন্দে মন্ডপ তৈরী হয়েছে। এছাড়া ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজাগানা, তরফপুর এবং বাঁশতৈল ইউনিয়নে উৎসব মুখর এবং আনন্দঘন পরিবেশে দূগা পূজার প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। মন্ডপে মন্ডপে কারীগরগন নিপুন হাতে গনেশ, স্বরসতি, কার্তিক, অসুর, সিংহ, পেঁচা, ইদুর, হাঁস, ময়ুর, সাপ, লক্ষি, মহাদেব ও লক্ষি কটেইকে তৈরী করছেন। প্রতিমা তৈরী এবং প্রতিমায় রং তুলির আচর প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শেষ মুহর্তে চলছে রং ও তুলির কাজ। ২৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু এবং ২ অক্টোবর মহা দশমীর মধ্য দিয়ে এ বছর দুর্গা পুজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এ বছর জেলার মধ্যে মির্জাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশী ২৬০ মন্ডপে শারদীয়া দুর্গা পুঁজা অনুষ্ঠিত হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
অপর দিকে ২শ বছরের ঐতিহ্য শহীদ দানবীর রনদা প্রসাদ সাহার দৃষ্টি নন্দন পুজা মন্ডপ এবং কুমুদিনী কমপ্লেক্্র ও রণদা প্রসাদ সাহার গ্রামের বাড়ি পরিদর্শনে আসবেন অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের বিদেশী কুটনৈতিকসহ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন। উপজেলা প্রশাসন ও কুমুদিনী পরিবারের সদস্যগন জানিয়েছেন এ জন্য নেওয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা। কুমুদিনী কমপ্লেক্সের এবং আরপি সাহার গ্রামের বাড়ি মির্জাপুর সাহাপাড়া নানা সাজে সজ্জিত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহ অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম এবং মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রাসেদুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি মন্ডপে সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ন ভাবে পুজা উদযাপনের লক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগন প্রস্তুত রয়েছে। পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নের বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ সুশিল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রস্তুতিমুলক সভা ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে পুলিশের পাশাপাশি আনসার বাহিনী, গ্রাম পুলিশ ও সাধা পোষাকধারী পুলিশ, র্যাবসহ স্টাইকিং ফোর্স কাজ করবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এ বছর বাংলাদেশের মধ্যে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৬০ মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ, আনসার, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যগন কাজ করবেন।

Discussion about this post